মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ রিপোর্ট :
হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান ও তার দুই সহযোগী শরীফ শাহেদ বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন রিপনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। বুধবার রাত ১০টায় গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউটি কারাগার মুফতি হান্নান ও বিপুল এবং রাত ১০টা ১ মিনিটে সিলেট কারাগারে রিপনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
কাশিমপুর হাই সিকিউটি কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মিজানুর রহমান জানান, রাত ১০টায় জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান ও তার সহযোগী বিপুলকে একই সময়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
আর সিলেট কারাগারে মুফতি হান্নানের অপর সহযোগী রিপনের ফাঁসি কার্যকরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিনিয়র জেল সুপার সগীর মিয়া। তিনি জানান, রাত ১০টা ১ মিনিটে রিপনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
গাজীপুরে একই মঞ্চে মুফতি হান্নান ও বিপুলের ফাঁসি কার্যকর করেন কয়েদি রাজু এবং সাকু মিয়া। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ডিআইজি প্রিজন তৌহিদুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক এস এম আলম, গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুনুর রশিদ, সিভিল সার্জন মঞ্জুরুল আলম।
সিলেটে রিপনের ফাঁসি কার্যকরের সময় উপস্থিত ছিলেন কারা কর্তৃপক্ষসসহ জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও সিভিল সার্জন।
কারাগার সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় মুফতি হান্নান ও বিপুলকে তওবা পাঠ করান কারাগার মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মামুনুর রশীদ। এরপর দুজনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন গাজীপুরের সিভিল সার্জন মঞ্জুরুল আলম।
মুফতি হান্নান বিশেষ কিছু খেতে ইচ্ছা প্রকাশ না করায় কারাগারের নিয়মানুযায়ী তাকে এদিনের মেন্যু সাদা ভাত, সবজি ও ডাল খেতে দেয়া হয় সন্ধ্যায়।
মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর সামনে রেখে কড়া নিরাপত্তা নেয়া হয় কারাগার এলাকায়। বিকাল থেকেই সামনের সড়কে জনসাধারণের চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও দোকানপাট বন্ধ করে দেয়া হয়।
এর আগে মুফতি হান্নানের পরিবার ও আত্মীয় স্বজন কারাগারে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করে। সকালে মুফতি হান্নানের স্ত্রী জাকিয়া পারভিন রুমা বেগম, বড় ভাই আলী উজ্জামান মুন্সী, মেয়ে নাজনীন ও নিশি খানম কারাগারে প্রবেশ করে মুফতি হান্নানের সঙ্গে কথা বলেন।
সিলেটের হজরত শাহজালাল (রা.) – এর মাজারে ২০০৪ সালের ২১ মে ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায় ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত পাঁচ আসামির মধ্যে মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। ওই হামলায় আনোয়ার চৌধুরী, সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত এবং পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত হন।
ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলে রায় বহাল থাকলে পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন তারা। গত ১৯ মার্চ রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত। এরপর অপরাধ স্বীকার করে গত ২৭ মার্চ কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করলে তা নাকচ করেন রাষ্ট্রপতি। সোমবার রাষ্ট্রপতির নাকচের আদেশ কারাগারে পৌঁছায়।
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/১২-এপ্রিল-২০১৭ইং/নোমান