মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ রিপোর্টঃ
এবারের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানায়নি আইনজীবীদের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিল।
স্মৃতিসৌধে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তা বাতিলের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বার কাউন্সিলের ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান শ ম রেজাউল করিম। এ বিষয়ে কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল (পদাধিকার বলে) মাহবুবে আলমের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
আবেদন পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে সোমবার (১৭ এপ্রিল) চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবসে বার কাউন্সিল জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানালেও এ বছরই প্রথম শ্রদ্ধা জানাতে যাওয়া হয়নি। এ বিষয়ে বার কাউন্সিলের নির্বাহী কমিটির সভায় আলোচনার জন্য উপস্থাপন করা হবে।
শ ম রেজাউল করিমের লিখিত আবেদনে বলা হয়, ‘আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণকারী সর্বোচ্চ সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিল রাষ্ট্রের সকল জাতীয় দিবস উদ্যাপন করে থাকে যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে। ২০১৭ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ দিবস উদ্যাপনে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সচিব মো. আনিসুর রহমান (জেলা ও দায়রা জজ) গত ২৩ মার্চ অফিস আদেশও জারি করেন’।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘বার কাউন্সিলের একজন নির্বাচিত সদস্য হিসেবে আমি ওই দিবস পালনের উদ্দেশ্যে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাই। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পরেও বার কাউন্সিলের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে না পেয়ে টেলিফোনে যোগাযোগ করি। টেলিফোনে বার কাউন্সিলের কর্মকর্তা নাজমুল আহসান জানান, তাকে প্রশাসন বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, এ কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে’।
‘শুনে আমার কাছে বিষয়টি বিস্ময়কর মনে হয়। পরে বার কাউন্সিলের সচিব মো. আনিসুর রহমানকে টেলিফোন করে জানতে পারি যে, তিনি কর্মসূচি বাতিল করা সংক্রান্ত বিষয়ে অবহিত নন’।
‘জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানানো তথা স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপনের কর্মসূচি বাতিল করার ঔদ্ধত্য অত্যন্ত গুরুতর বিষয়। এটি সরকারি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত অবমাননার সামিল’।
আবেদনে আরও বলা হয়, ‘স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন করতে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের পক্ষ থেকে ব্যানার, শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ফুলের মালাসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অন্যরা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে যান দীর্ঘদিন ধরে। অথচ এ বছর কে বা কারা কি কারণে সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে, তা আমার বোধগম্য নয়’।
‘এ ঘটনা আমাকে হতবাক করেছে। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এহেন সিদ্ধান্ত তথা কাজ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিষয়টি রাষ্ট্রদ্রোহিতার সমতুল্য। ফলে বিষয়টি তদন্তপূর্বক এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক’- আবেদনে এ দাবি জানান শ ম রেজাউল করিম।