মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম জ্বালানি কোম্পানি শেভরন।
এ লক্ষ্যে চীনের হিমালয় এনার্জি কোম্পানি লিমিটেডের কাছে বাংলাদেশে তাদের পুরো সম্পদ বিক্রির চুক্তি চূড়ান্ত করেছে কোম্পানিটি। তবে কত টাকায় শেভরনের সম্পদ বিক্রি হচ্ছে তা জানা যায়নি।
বাংলাদেশের তিনটি গ্যাসক্ষেত্রে বিনিয়োগ রয়েছে শেভরনের। ক্ষেত্রগুলো থেকে উত্তোলিত গ্যাসের একটি অংশের মালিক তারা, যা সরকার নির্ধারিত মূল্যে কিনে নেয়।
সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ চুক্তির কথা জানিয়েছে শেভরন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শেভরন করপোরেশন বাংলাদেশে তাদের সব সম্পদ বিক্রি করে দেওয়ার বিষয়ে হিমালয় এনার্জির সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছেছে। এর ফলে বাংলাদেশের বিবিয়ানা, মৌলভীবাজার ও জালালাবাদ ব্লকের গ্যাস উত্তোলনের দায়িত্ব পাচ্ছে হিমালয় এনার্জি। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিদিনের অর্ধেকেরও বেশি গ্যাস সরবরাহের নিয়ন্ত্রণ চীনের হাতে যাচ্ছে।
গত দুই বছরে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় লোকসান সামাল দিতে শেভরন বাংলাদেশের তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে বলে কিছু দিন ধরেই খবর আসছিল সংবাদমাধ্যমে। এর মধ্যে গত বছরের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এই কোম্পানি জানায়, ২০১৭ সালে প্রায় হাজার কোটি ডলারের সম্পদ তারা বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
গত বছর মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক কোম্পানি সান র্যামন শেভরনের গ্যাস সম্পদ বিক্রিতে সহযোগিতা করছে। ২০১৭ সালের মধ্যে তারা বিভিন্ন দেশে থাকা শেভরনের ১ হাজার কোটি ডলার মূল্যের সম্পদ বিক্রির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। ব্লুমবার্গের দাবি অনুযায়ী, ওই ‘বিভিন্ন দেশ’ এর মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে।
প্রতিবেদনে ওই সংবাদমাধ্যম জানায়, গত এক দশকের মধ্যে জ্বালানি তেলের দরপতনের ফলে তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলো এ বছর তাদের ৫০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের তেল-গ্যাস কম্পানিগুলোর মধ্যে ইক্সন মবিল করপোরেশনের পর সবচেয়ে বড় কোম্পানি শেভরন।
তেলের দরপতনের ফলে চলতি বছরের জুলাইয়ে সবচেয়ে বড় আর্থিক সংকটে পড়ে শেভরন। ২০০১ সালের পর এর আগে এমন লোকসানের মুখে পড়তে হয়নি কোম্পানিটিকে।
আর্থিক সংকট কাটাতে শেভরন বাংলাদেশে থাকা তাদের প্রায় ২০০ কোটি (২ বিলিয়ন) ডলার মূল্যের গ্যাসসম্পদ বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে। ভারত ও চীনের কিছু তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান তা কেনার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে। তবে শেষ পর্যন্ত চীনের হিমালয় এনার্জি কোম্পানির কাছে বিক্রি করল শেভরন।