ঢাকা : আপন জুয়েলার্সের মালিক তিন ভাই গোলজার আহমেদ, দিলদার আহমেদ ও আজাদ আহমেদের বিরুদ্ধে পৃথক পাঁচ মামলা দায়ের করেছে শুল্ক গোয়েন্দা।
বৃহস্পতিবার শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে কাস্টমস আইনে দিলদার আহমেদের বিরুদ্ধে তিন মামলা, গোলজার আহমেদেরর বিরুদ্ধে দুই মামলা ও আজাদ আহমেদের বিরুদ্ধে পৃথক এক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি আরো জানান, শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে কাস্টমস আইনে আপন জুয়েলার্সের মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে পাঁচ মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া জব্দকৃত সাড়ে ১৫ মণ সোনার বিষয়ে ফৌজদারি আইনে আরো মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে আপন জুয়েলার্সে বিভিন্ন সময়ে অর্ডার ও বুকিং দিয়েছেন এমন ৩৮৯ জন গ্রাহককে সোনা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আজ থেকে আবেদনপত্র নেওয়া হচ্ছে।
গত ৪ জুন আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শোরুম থেকে মোট ১৫.১৩ মণ স্বর্ণ, ৭৩৬৯ পিস ডায়মন্ডখচিত অলঙ্কার, নগদ ৬৭.৪০ লাখ টাকা ও ১০০ মার্কিন ডলার জব্দ করে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়।
এরপরই খুলে দেওয়া হয় আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শোরুম।
গত ১৩-১৪ মে চোরাচালানের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও অনুসন্ধানের ভিত্তিতে অভিযান করে আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শোরুম থেকে বিপুল স্বর্ণ ও ডায়মন্ড সাময়িকভাবে আটক করে শোরুমগুলোতে আইনানুগ জিম্মায় দেওয়া হয়। এরপর তিনবার সময় ও সুযোগ দেওয়ার পরও আপন জুয়েলার্স মালিকপক্ষ এসব মূল্যবান সামগ্রীর বৈধ কাগজ দেখাতে পারেননি।
শুল্ক গোয়েন্দা কাগজপত্র যাচাইয়ে কোনো বৈধতা না পেয়ে শোরুমের স্বর্ণ ও ডায়মন্ড জব্দের সিদ্ধান্ত নেয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকে স্বর্ণ ও ডায়মন্ড হস্তান্তরের পর শোরুমগুলো আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
গত ২৯ মে শুল্ক গোয়েন্দার পাঁচটি টিম দিনব্যাপী আপন জুয়েলার্সের গুলশানের দুটি শাখা, উত্তরা, মৌচাক ও সীমান্ত স্কয়ারের শাখায় উপস্থিত হয়ে ৮৫ গ্রাহকের অলঙ্কার হস্তান্তর করেন। এর মধ্যে আপন জুয়েলার্সের উত্তরা শাখায় ১৫ জন, সুবাস্তু ইমাম শাখায় ১৩ জন, গুলশান ডিসিসি মার্কেট শাখায় ১৫ জন, মৌচাক শাখায় ১৯ জন ও সীমান্ত স্কয়ার শাখায় ২৩ জনসহ মোট ৮৫ জন গ্রাহক প্রামাণ্য দলিল প্রদর্শন করে গচ্ছিত স্বর্ণালংকার ফেরত নেন। অবশিষ্ট গ্রাহক নথিপত্রসহ উপস্থিত না হওয়ায় তাদের অলংকার ফেরত দেওয়া সম্ভব হয়নি।
গত ২৮ মার্চ দ্য রেইনট্রি হোটেলে জন্মদিনের পার্টিতে আমন্ত্রণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধু নাঈম আশরাফ। ৬ মে রাতে ভুক্তভোগীদের একজন বনানী থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এরপরই শুল্ক গোয়েন্দা আপন জুয়েলার্সে অবৈধ অলঙ্কার জব্দ করতে অভিযানে নামে।