muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

কিশোরগঞ্জের খবর

সৌদী পুলিশের গুলিতে প্রান হারালো ভৈরবের দুই হতভাগা

কাজী রুমেল, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) :
সৌদি আরবের দাম্মামের আলকাতিফ এলাকায় পুলিশের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন একজন।
নিহত দুই বাংলাদেশি হলেন কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌরশহরের চণ্ডীবের এলাকার শাহপরাণ (২৮) ও শামীম (৪০)। আহত মাহবুবের বাড়ি উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের ছনছাড়া গ্রামে। তাঁদের হতাহতের খবর দাম্মামে থাকা স্বজনদের মাধ্যমে জেনেছেন বলে জানিয়েছে তাঁদের পরিবার।
নিহতদের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৬ জুন সৌদি আরব সময় রাত সাড়ে ৯টার দিকে কাজ শেষ করে আকামা জটিলতায় আলকাতিফ এলাকায় নিয়োগকর্তার (কফিল) বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন শাহপরান, শামীম ও মাহবুব। এ সময় ওই এলাকায় শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে ১৪৪ ধারা জারি ছিল। তারা ১৪৪ ধারা সম্পর্কে না জানায় গাড়িতে করে সেখানে যান। গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ শামীম, শাহপরাণ ও মাহবুবকে সেখান থেকে উদ্ধার করে দাম্মামের ‘আবুমি’ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক শামীম ও শাহপরাণকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত মাহাবুব বর্তমানে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
পারিবারিক সূত্রে আরো জানা যায়, নিহত শামীম মধ্যচণ্ডীবের এলাকার মৃত সুরুজ মিয়ার ছেলে। অপরদিকে শাহপরাণ একই এলাকার বুদাই বেপারির বাড়ির নূরু মিয়ার ছেলে। নিহতরা পরস্পর জ্ঞাতিভাই। দাম্মামে শাহপরাণের আরো তিন ভাই থাকেন। অপর তিন ভাই হলেন জাফরান, মিজান ও ইমরুল কায়েস।
দাম্মাম থেকে মুঠোফোনে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জাফরান জানান, ঘটনার পর থেকে সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাসে তারা ছোটাছুটি করছেন। কিন্তু তেমন কোনো সাড়া পাচ্ছেন না। ‘দেখব, দেখছি বলে’ কালক্ষেপণ করছেন সেখানকার কর্মকর্তারা। তিনি তাঁর ভাইদের লাশ দেশে পাঠাতে সরকারের সহায়তা কামনা করেন।
অপরদিকে নিহত শামীম ভৈরবের ফেরিঘাট বাজারে ব্রয়লার মুরগি বেচাকেনার ব্যবসা করতেন। স্ত্রী আলেয়া খাতুন, সদ্য এসএসসি পাস করা মেয়ে তমা, মাদ্রাসায় পড়ুয়া মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস এবং স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেনে কেজি ওয়ানে পড়ুয়া একমাত্র ছেলে ছিদ্দিকুর রহমানকে নিয়ে ছিল তাঁর সংসার। অভাবের সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে শাহপরাণদের ভাইদের হাত ধরে মাত্র চার মাস আগে তিনি দাম্মামে পাড়ি জমান। শামীমের আকামার জন্যই তাঁর নিয়োগকর্তার বাড়িতে যাচ্ছিলেন শামীম, শাহপরাণ ও মাহবুব।
এ ব্যাপারে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দিলরুবা আহমেদের সঙ্গে  যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন বলে জানান।

 

 

মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/১২-০৬-২০১৭ইং/ অর্থ  

Tags: