পাপন সরকার শুভ্র, রাজশাহীঃ
রাজশাহীর তানোর উপজেলার মন্ডুমালার পাঁচন্দর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের ওই জঙ্গি বাড়িটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ।
ধারণা করা হচ্ছে বাড়ির ভিতরে আরো বিস্ফোরক রয়েছে। তাই এগুলো উদ্ধার ও নিস্ক্রিয় করার জন্য ডিএমপির বোম্বা ডিসপোজাল ইউনিটকে ডাকা হয়েছে।
দুপুরের মধ্যে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছালে সেগুলো উদ্ধার ও নিস্ক্রিয় করার পর অভিযান সমাপ্ত করা হবে। বর্তমানে ওই বাড়ির এক কিলোমিটার এলাকার মধ্যে জনসাধারণের চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। লাল নিশান দিয়ে আশপাশে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ।
এদিকে, ওই জঙ্গি বাড়ি থেকে তিনজনকে আটকের পর নারী ও শিশুসহ আরও ৯ জনকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। সবাইকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে সকালে পুলিশ দ্বিতীয় দফায় ওই বাড়িতে তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করে। তবে ওই বাড়িতে আর কাউকে পাওয়া যায়নি । এই নিয়ে ওই বাড়ি থেকে মোট ১২ জনকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হলো। এর মধ্যে
আগে আটক তিন ছাড়া অন্যরা হলেন- ওই বাড়ির মালিক গৌরাঙ্গপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রমজান আলী (৫৪), তার স্ত্রী আয়েশা বিবি (৫০), বড় ছেলে ইব্রাহিম হোসেনের স্ত্রী মর্জিনা বেগম (২৮), তার তিন মেয়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তামান্না খাতুন (০৮), তাসকিরা খাতুন (০৪) ছয় মাসের শিশু তানসিরা, ছোট ছেলে ই¯্রাফিল আলমের স্ত্রী হারেছা খাতুন (২১),
রমজান আলীর মেয় হাওয়া খাতুন (২০) ও তার শিশু।
এর আগে অভিযানের শুরুতে আটক তিন জন হলেন রমজান আলীর ছেলে ইব্রাহিম হোসেন (৩৫) ও ই¯্রাফিল আলম (২৬) ও জামাতা রবিউল ইসলাম (২৫)। তারা নব্য জেএমপির সদস্য। তাদের তানোর থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। অভিযান শেষে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বর্তমানে রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁঞাসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে রয়েছেন। এছাড়া আইন- শৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরাও ঘটনাস্থলে রয়েছেন।
রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সুমিত চৌধুরী বলেন, রোববার গভীর রাতে অভিযানের সময় ওই বাড়ি থেকে দুইটি সুইসাইডাল ভেস্ট, পাঁচ রাউন্ড গুলিসহ একটি ৭.৬২ মডেলের বিদেশি পিস্তল ও একটি ম্যাগজিন
উদ্ধার করা হয়েছে। বাড়িতে এখন আর কেউ নেই। তবে ধারণা করা হচ্ছে বাড়ির মধ্যে আরও বিস্ফোরক থাকতে পারে।
এজন্য ডিএমপির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেওয়া হয়েছে। দুপুরের মধ্যে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। তারা এসে বিস্ফোরক উদ্ধার ও নিস্ক্রিয় করার পর এই অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হবে। আপাতত বাড়িটি ঘিরে রাখা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমিত চৌধুরী জানান, রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও রাজশাহী জেলা পুলিশ রামজানের বাড়িটি ঘিরে ফেলে। রাত আড়াইটার দিকে এ সময় ওই বাড়ি থেকে সবাইকে
বের হয়ে আসতে বলা হয়। পুলিশের আহবানে সাড়া দিয়ে ওই বাড়ি থেকে তিনজন বের হয়ে আসে। পরে সকালে আরও নারী ও শিশুসহ আরও ৯ জনকে বাড়ি থেকে বের করে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়। ইব্রাহীম, ইসরাফিল ও রবিউল তিনজনই জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। আটক তিন জনের মধ্যে ইস্রাফিল আলম মুন্ডুমালা কামিল মাদরাসার ছাত্র ছিলেন। তিনি বর্তমানে গ্রামে হোমিও চিকিৎসা করতেন। ভিন্নমতের কারণে গ্রামের কারো সঙ্গে এই পরিবারটি সেভাবে
মিশতেন না। তারা প্রতি বছর সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে তারা একদিন আগেই ঈদ করতেন।
বগুড়া গোয়েন্দা পুলিশের তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয় বলেও জানান সুমিত চৌধুরী।
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/১২-০৬-২০১৭ইং/ অর্থ