শফিক কবীর, স্টাফ রিপোর্টার :
উপমহাদেশের অন্যতম সবচেয়ে বড় ও লাখো লাখো মুসল্লিদের উপস্থিতিতে ঈদের জামাত অনুষ্টিত হয়ে আসছে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে।
তাই, প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও ১৯০তম ঈদের জামাতকে সামনে রেখে শোলাকিয়া মাঠকে বর্নিল সাঝে সজ্জিত সহ সকল কাজ সম্পন্ন করেছে স্থানীয় প্রশাসন ও পৌরসভা।
জেলা প্রশাসক জনাব আজিমুদ্দিন বিশ্বাস বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারেও আগত মুসল্লিদের সার্বিক নিরাপত্তা ও সুবিধার্থে দুর-দুরান্ত হতে আগত মুসল্লিদের রাত্রি যাপনের জন্য এবছর মাঠের পাশেই অবস্থিত আজিমউদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে থাকার সু-ব্যাবস্থা করা হয়েছে। গত বছরের ব্যর্থ জঙ্গি হামলার জন্য এবছর মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নেয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য রাখা আছে মেডিক্যাল ঠিম ও জরুরী এ্যাম্বুলেন্স। আগত মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ দুটি ট্রেন, ভৈরব ও ময়মনসিংহ হতে সকাল ৫:৩০ মিনিট থেকে যাতায়াত করবে।
পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান বলেন, আমাদের প্রস্তুত রয়েছে ১২০০ পুলিশ বাহিনী, ৫ প্লাটুন বিজিবি, শতাধিক র্যাব বাহিনী সহ ডিবি ও সিআইডির সাদা পোশাকধারী অসংখ্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। পরিশেষে বাড়তি নিরাপত্তার জন্য কেউ যেন কোন সমস্যার সম্মুখীন নাহয় এজন্য সকলের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন।
পৌর মেয়র জনাব মাহমুদ পারভেজ বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও ঐতিহাসিক এই শোলাকিয়া ঈদগাহের যাবতীয় কাজ পৌরসভা সম্পন্ন করেছে। যেমন- সৌন্দর্য বর্ধিত করার জন্য মাঠের দেয়াল, মসজিদ, ওযুখানা সহ সকল স্থানে রং করা, আগত মুসুল্লিদের জন্য স্থায়ী রাস্তাঘাট, ড্রেন কালভার্ট, মাঠে মাটি ভরাট,কাতারের জন্য দাগকাটা, আলোকসজ্জা, অতিরিক্ত লাইটিং, দৃষ্টিনন্দন তোরনসহ যাবতীয় কাজ করে আসছে পৌরসভা। তিনি আরো বলেন গত বছরের ব্যর্থ জঙ্গি হামলার অপচেষ্টায় কান নাদিয়ে দেশ বাসীর কাছে আহ্বান/আমন্ত্রন রাখেন এই শোলাকিয়া মাঠে নামাজ আদায় করার জন্য ও অগ্রীম ঈদের শুভেচ্ছা জানান।
আগত মুসুল্লিদের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে আরো অতিরিক্ত ব্যাবস্থা, মাঠে তৈরি করা হয়েছে র্যাব ও পুলিশের জন্য ৯টি ওয়াচ টাউয়ার, মাঠের ভিতর ও বাহিরে স্থাপন করা হয়েছে ৫০টি সিসি ক্যামেরা, অস্থায়ী কন্ট্রোলরুম ও নিরাপত্তার জন্য সকল আগাম প্রস্তুত করে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাঠ পরিচালনা কমিটির সম্পাদক জনাব আব্দুল্লাহ আল মাসউদের দিকনির্দেশনায়/তদারকিতে ও নিজস্ব অর্থায়নে স্থাপন করা হয়েছে মাঠের পুর্ব ও দক্ষিণ পাশের দুটি পুকুরে অস্থায়ী অযুখানা স্থাপন ও পরিস্কার পরিছন্নতার সকল কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ঐতিহাসিক এই মাঠে আগত মুসুল্লিদের যেন বিন্দু পরিমাণ কষ্ট/অসুবিধা না হয় সেদিক বিবেচনা করেই সকল প্রস্তুতি আমরা সম্পন্ন করেছি, বাকীটুকু নির্ভর করছে প্রাকৃতিক প্রতিকুলতার উপর।
তাছাড়া দুর-দুরান্ত হতে আগত মুসুল্লিদের জন্য কিশোরগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স, ইফতার ও রাতের খাবারের জন্য, চেম্বারের পরিচারক শিল্পপতি স্থানীয় মোঃ আল আমীনকে আহ্বায়ক করে সকল অগ্রীম ব্যাবস্থা করে রেখেছে।
স্থানীয় এলাকাবাসীর ধারনা গত বছরের ব্যর্থ জঙ্গি হামলার আতংক এখনও কাটেনি। তারপরও আশা করছেন এবার ঈদের জামাতে আগত মুসল্লি গতবারের তুলনায় কম হবে না।
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/২৩-০৬-২০১৭ইং/ অর্থ