মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ ।।
কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদুল ফিতরের জামাতের বাহিরে জঙ্গি হামলার এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো সেই দুঃসহ স্মৃতি ভুলতে পারেননি নিহত গৃহবধূ ঝর্ণা রানী ভৌমিকের পরিবারের সদস্য, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় এলাকাবাসীরা।
গত বছর ৭ জুলাই (আজকের এ দিনে) দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাতের চর শোলাকিয়া সবুজবাগ মোড়ে মুফতি মোহাম্মদ আলী জামে মসজিদের সামনে পুলিশ সদস্যদের ওপর আচমকা হামলা চালায় সশস্ত্র জঙ্গিরা। হামলায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন দুই পুলিশ সদস্য ও এক গৃহবধূ। এ ছাড়া গুরুতর আহত হন আট পুলিশসহ কয়েকজন নিরীহ মানুষ। ঘটনার সময় পুলিশের গুলিতে এক জঙ্গিও নিহত হয়।
ঝর্ণা রাণী ভৌমিকের স্বামী গৌরাঙ্গ নাথ ভৌমিক জানান, এই শোক এখনো আমরা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। ঘটনার পর অনেকেই সহযোগিতার আশ্বাস দিলেও তা শুধু কথা হয়েই আছে। গৌরাঙ্গ নাথ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত্ করে পরিবারের দুঃখ বেদনার কথা জানাতে চান। পাশাপাশি তিনি এই হত্যাকান্ডের সঠিক বিচারও দাবি করেন।
ঝর্ণা রাণী ভৌমিকের ছোট ছেলে শুভ দেব কান্না জড়িত কন্ঠে বলে, ‘মাকে ছাড়া আমার কিছু ভালো লাগে না। মাকে মাঝে দুঃস্বপ্নে দেখতে পাই।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্হানীয়রা জানান, সেদিনের কথা মতে হলে তারা এখনো আঁতকে ওঠেন। চোখের সামনে প্রায়ই এ দৃশ্য ভেসে ওঠে। শিশুদের মন থেকে সেই ঘটনা এখনো মুছে যায়নি।
এদিকে ঘটনার এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও তদন্তকাজ শেষ করে অভিযোগপত্র জমা দিতে পারেনি পুলিশ। হামলার পেছনে জড়িত অর্থদাতা,অস্ত্রদাতা ও মদদতদাতাদের চিহৃত করতেই এত বিলম্ব হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মামলার আসামি ঘটনাস্হলে আটক জাহিদুল হক ওরফে তানিম, আনোয়ার হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী জেল হাজতে আছে। এ ছাড়া ঘটনার সময় আটক পুলিশের গুলিতে আহত শফিউল ওরফে ডন গত বছরের ৪ আগষ্ট র্যাবের সাথে বন্ধুকযুদ্ধে মারা যায়।
কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান (পিপিএম) মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠকে জানান, এটি একটি বড় মামলা। এর সঙ্গে আরও অনেক ঘটনা জড়িত আছে। সঠিক পথেই মামলার তদন্ত এগুচ্ছে। হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/০৭-০৭-২০১৭ইং/ অর্থ