muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের ওপর হামলা, সরকার ও প্রশাসন নিরব

sust
মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডেস্কঃ সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের উপর হামলার পর সরকার ও প্রশাসন রহস্যজনভাবে নিরব রয়েছে৷ এটাকে শিক্ষকদের বাড়াবাড়ির ফল বলে প্রচারণাও চালানো হচ্ছে৷ এমনকি ভিসি এই হামলার সমর্থনেই কথা বলেছেন৷

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আমিনুল হকের পদত্যাগের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ গত এপ্রিল মাস থেকে আন্দোলন করে আসছিলেন৷ সেই আন্দোলনের অংশ হিসেবেই রবিবার তাঁরা ভিসির কার্যালয় ঘেরাও করতে যান৷ তখন তাঁদের ওপর হামলা চালায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা৷ এই হামলার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ‘‘এখন আমার গলায় দড়ি দেয়া উচিত৷”
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি পার্থ অবশ্য দাবি করেন, ‘‘ছাত্রলীগ এই ঘটনায় জড়িত নয়, তবে কেউ ব্যক্তিগতভাবে জড়িত থাকতে পারে৷”
শিক্ষকদের ওপর এই হামলায় ডয়চে ভেলের কাছে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ৷ তিনি বলেন, ‘‘এটি অত্যন্ত জঘন্য বিষয়৷ যারা শিক্ষকদের বেইজ্জত করে তাদের ছাত্র বলা যায় না, তারা সন্ত্রাসী৷ সরকারের উচিত ঘটনার সাথে জড়িতদের শক্ত হাতে দমন করা এবং কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা৷ তা না হলে এটি সমাজে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়বে৷ সমাজে আগে থেকেই পচন ধরেছে৷ এখন এটা চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গেছে৷”
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, ‘‘এটি অনাক্ষিত ঘটনা৷ ছাত্ররা শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করবে এমনটা কখনো কাম্য নয়৷
ছাত্রলীগের এই হামলার পর ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ‘‘এখন আমার গলায় দড়ি দেয়া উচিত৷”
ছাত্রদের লেজুড়বৃত্তি সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে৷ তা না হলে ছাত্ররা জ্ঞান-দক্ষতা অর্জন করতে পারবে না৷ ফলে দেশের সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বিদেশিদের শরণাপন্ন হতে হবে৷ এটা কোনো অবস্থায় প্রত্যাশিত নয়৷”
তবে এই ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ কোনো প্রতিক্রিয়া এখনো জানাননি৷ তাঁর নিরবতার সমালোচনা কওে সাবেক মন্ত্রী ও সরকার দলীয় সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সোমবার বলেন, ‘‘এর আগেও মন্ত্রণালয় শিক্ষকদের সমস্যার সমাধান করেছিল৷ এখনও শিক্ষামন্ত্রীর উচিত তড়িৎ গতিতে সিলেট গিয়ে সমস্যার সমাধান করা৷”
তিনি আরো বলেন, ‘‘যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিজের স্বার্থে ছাত্রদের ব্যবহার করে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকার কোনো নৈতিক ভিত্তি নেই৷”
সুরঞ্জিত বলেন, ‘‘শিক্ষকদের ঘটনায় ছাত্রলীগের নাম জড়িয়ে পড়ায় আমরা বিব্রত৷ আমি মনে করি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদেও উচিত এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া৷”
জানা গেছে, ভিসি ছাত্রলীগ নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে বিরোধী শিক্ষকদের ‘শায়েস্তা’ করতে বলেন৷ এ বিষয়ে তাঁর সরাসরি বক্তব্য জানা না গেলেও, তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনা আমার জানা নেই৷ কোনো শিক্ষক আমার কাছে কোনো অভিযোগও করেননি৷”
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনায় সরাসরি কোনো মন্তব্য না করলেও, সোমবার তিনি ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ছাত্রলীগকে একটি আগাছামুক্ত সংগঠনে পরিণত করতে হবে৷
তিনি বলেন, যে জমিতে আগাছা আছে, সে জমিতে ফসল হয় না৷ আগাছা তুলে ফেলতে হয়৷ আগাছা তুলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কর্মী হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে৷

Tags: