ডেস্ক রিপোর্ট ।। সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধানের চাকরির মেয়াদ সর্বোচ্চ চার বছর করা হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি তাদের নিয়োগ দেবেন। নিয়োগ প্রাপ্তির পর পুরো মেয়াদে তারা দায়িত্ব পালন করতে পারবেন, যদি সরকার বাধ্যতামূলক অবসরে না পাঠান।
বাহিনী প্রধানদের চাকরির মেয়াদ নির্ধারণ এবং বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা নির্ধারণ করে নতুন আইন করছে সরকার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে প্রতিরক্ষা বাহিনীসমূহের প্রধানদের (নিয়োগ, বেতন, ভাতা এবং অন্যান্য সুবিধা) আইন-২০১৭ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, এতদিন এ সংক্রান্ত কোনো আইন ছিল না। জয়েন্ট সার্ভিসেস ইন্সট্রাকশনস (জেএসআই) নামে একটি সার্কুলার দিয়ে এটা চলত। বাহিনী প্রধানদের নিয়োগ, বেতন ও ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধাদি আইন দিয়ে নির্ধারিত হবে। এটা সংবিধানে বলা আছে। যেহেতু সংবিধানের বাধ্যবাধকতা আছে, সেহেতু আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে।
সচিব বলেন, জয়েন্ট সার্ভিসেস ইন্সট্রাকশনস এর সার্কুলারে বাহিনী প্রধানদের চাকরির সময় নির্ধারণ করা ছিল না। নতুন আইনে তাদের চাকরির সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘চার বছরের জন্য উনারা নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। রাষ্ট্রপতি তাদের নিয়োগ দেবেন।’
বাহিনী প্রধানদের বেতন ভাতার কথা উল্লেখ করে শফিউল আলম জানান, ‘তিন বাহিনী প্রধান মাসে ৮৬ হাজার টাকা মূল বেতনের সঙ্গে অন্যান্য ভাতা ও সুযোগ সুবিধা পাবেন। মূল বেতনের এই পরিমাণ মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বেতনের সমান।
‘বাহিনী প্রধানরা বিশেষ আবাসিক সুবিধা, আবাসিক সংশ্লিষ্ট সুবিধা, সার্বক্ষণিক গাড়ি, সামরিক হাসপাতালে বিনা খরচে নিজে ও পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা, রেশন, ভবিষ্যৎ তহবিল ও সহায়ক জনবল সুবিধার পাশাপাশি এককালীন আউটফিট ভাতা, ভ্রমণ ভাতা, উৎসব ভাতা, নববর্ষ ভাতা ও শ্রান্তিবিনোদন ভাতা পেয়ে থাকেন-’ যোগ করেন সচিব।
এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে প্রতিরক্ষা বাহিনীসমূহের প্রধানদের (নিয়োগ, বেতন, ভাতা এবং অন্যান্য সুবিধা) আইন-২০১৭ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।
সে সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছিলেন, ‘সরকারি চাকরির অবসরের বয়সসীমা ৫৯ বছর এক্ষেত্রে কার্যকর হবে না। কোনো বাহিনীর প্রধান ৫৯ বছর বয়স পার হওয়ার পরও চার বছরের পুরো মেয়াদ দায়িত্ব পালন করতে পারবেন, যদি সরকার তাকে অবসরে না পাঠায়। চাকরির বয়স থাকুক আর নাই থাকুক, যোগ দেওয়ার পর মেয়াদ চার বছর থাকবে।
তিনি আরো বলেছিলেন, চাকরি এক বছর থাকা অবস্থায় কেউ কোনো বাহিনীর প্রধান পদে নিয়োগ পান, তাহলে সরকার চাইলে তিনি আরো তিন বছর সময় পেতে পারেন। যেমন কেউ জেনারেল হিসেবে অবসরে যাওয়ার কথা ফিফটি নাইনে (বছরে), ওই সময় যদি আর্মি চিফ হন, তাহলে ওই সময় থেকেই চার বছর পুর্ণ মেয়াদে তিনি দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।