আইন আদালত রিপোর্ট :
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে জরুরি বিচারিক বিধানসংক্রান্ত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরও দুই সপ্তাহ বেড়েছে। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের সময় আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ছয় সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এর ফলে পরবর্তী দুই সপ্তাহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন মামলার আইনজীবীরা।
গত ১১ মে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসংক্রান্ত আইনের কয়েকটি ধারা অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের হাইকোর্ট বেঞ্চ। এর ফলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সুযোগ নেই বলে আইনজীবীরা জানিয়েছিলেন। পরে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২১ মে আপিল বিভাগ ২ জুলাই পর্যন্ত রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। এরপর ৪ ও ১৮ জুলাই দুই দফায় আরও দুই সপ্তাহ করে স্থগিতাদেশের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ভবন নির্মাণ আইনের কয়েকটি ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০১১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর এসথেটিক প্রপার্টিজ ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান খানকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ৩০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। সে বছরের ২০ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পান তিনি। পরে কামরুজ্জামান ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের (মোবাইল কোর্ট অ্যাক্ট ২০০৯) কয়েকটি ধারা ও এসব ধারার ওপর ভিত্তি করে তাকে দেওয়া সাজার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ১১ অক্টোবর কামারুজ্জামান হাইকোর্টে রিট করেন।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল দেন। এ ছাড়া ভবন নির্মাণ আইনের কয়েকটি ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০১১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর টয়নবি সার্কুলার রোডে অবস্থিত এক বাড়ির মালিক মো. মজিবুর রহমানকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৩০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। আইনের বিধান চ্যালেঞ্জ ও অর্থ ফেরতের নির্দেশনা চেয়ে ওই বছরের ১১ ডিসেম্বর রিট করেন মজিবুর। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই দিন হাইকোর্ট রুলসহ সাজার আদেশ স্থগিত করেন। রায়ে আদালত তার জমিরানার ১০ লাখ টাকা ৯০ দিনের মদ্যে ফেরতের নির্দেশ দেন।
এ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের কয়েকটি বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১২ সালে ২ মে দিনাজপুরের বেকারি মালিকদের পক্ষে মো. সাইফুল্লাহসহ ১৭ জন আরেকটি রিট করেন। এতে বেকারিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ক্ষেত্রে খাদ্য বিশেষজ্ঞ ও পরীক্ষার জন্য যন্ত্রপাতি সঙ্গে রেখে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা চাওয়া হয়। শুনানি নিয়ে ওই বছরের ৮ মে হাইকোর্ট রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। সেই তিনটি রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে ১১ মে এই রায় দেন হাইকোর্ট।
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/৩১-জুলাই–২০১৭ইং/নোমান