মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ ।।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর অতিবৃষ্টিজনিত কারণে অকাল বন্যা ও জলাবদ্ধতায় প্রায়ই কিশোরগঞ্জের নিম্নাঞ্চলের ফসলি জমি তলিয়ে যায়। আবার বন্যা বা জলাবদ্ধতার কারণে সময়মত যেমন ফসল ফলানো যায় না, তেমনি আবার ধানের বীজতলা তৈরি করার মত শুকনো জায়গাও অবশিষ্ট থাকে না। এতে বিশেষ করে রোপা আমন মৌসুমে বীজতলা তৈরি করতে না পারায় কৃষকদের চারা সষ্কটে ভুগতে হয়।
বর্তমানে কৃষি বিভাগের উদ্যোগে জেলার বন্যাপ্রবণ এলাকায় এসব ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে ভাসমান বেডে সবজি ও আমনের বীজতলা কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এতে একদিকে যেমন কৃষক ভাসমান বেডে বিষমুক্ত সবজি উত্পাদন করতে পারবে। অন্যদিকে বন্যা থেকেও বীজতলা রক্ষা পাবে।
কিশোরগঞ্জের কয়েকটি উপজেলায় এবার ভাসমান বেডে বীজতলা ও সবজি চাষ করে কৃষকরা সাফল্য পেয়েছে। কলা গাছের ভেলায় বিভিন্ন ধরনের কচুরিপনা পঁচিয়ে ৬৭ জন কৃষক মোট ১৪৬টি ভাসমান বীজতলা তৈরি করেছেন। বীজতলাও বেশ ভাল হয়েছে। স্বাভাবিক জমিতে যেখানে ২৫-৩০ দিন পর বীজতলা থেকে চারা তুলার উপযোগী হয়। সেখানে ভাসমান বীজতলায় মাত্র ১২-১৫ দিনে ধানের চারা রোপনের উপযোগী হয়।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. এসএম নাজমুল ইসলাম, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক (সরেজমিন উইং) চৈতন্য কুমার দাস, ঢাকা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মুঈদ, ভাসমান সবজি উত্পাদন প্রকল্পের পরিচালক মাইনুল ইসলাম পাটোয়ারি সাম্প্রতি এসব বীজতলা পরিদর্শন করেন। এসময় জেলা প্রশাসক আজিমুদ্দিন বিশ্বাস এবং জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শফিকুল ইসলামও তাদের সঙ্গে ছিলেন।
অন্যদিকে পানিতে বানানো ২৫০টি ভাসমান বেডে সবজির আবাদ করা হয়েছে। একটি বেডে বীজতলা ও অন্য বেডে সবজি চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। ভাসমান বেডে সবজি চাষে কোন সার বা কীটনাশকের প্রয়োজন না হওয়ায় তারা কম খরচে মুনাফা অর্জন করছে। তারা এখন কোন খরচ ছাড়াই ভাসমান বেডে ঢেড়স,লালশাক, পুঁইশাক,কলমি শাকসহ বিভিন্ন জাতের সবজি আবাদ করতে পারছে। ২২ আগস্ট (মঙ্গলবার) জেলার অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও উপ-সচিব তরফদার মোহাম্মদ আক্তার জামীল সদর উপজেলার মহিনন্দ ইউনিয়নের কাশোরারচর বিলে ভাসমান বেডে সবজি ও বীজতলা চাষ পরিদর্শন করেছেন।
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/২৩-আগস্ট–২০১৭ইং/নোমান