লাইফস্টাইল ডেস্কঃ ইসলামের দৃষ্টিতে যৌনতা সম্পর্কিত ৪০ টি প্রশ্নোত্তর নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ
১. আমি স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করতে গেলে কী সামনের দিক থেকেই করতে পারবো? পিছন দিক থেকে করা যাবে?
– আপনি সামনে এবং পিছনে উভয় দিক থেকেই সঙ্গম করতে পারবেন। তবে সঙ্গম অবশ্যই যোনীপথ দিয়ে করতে হবে।
২. আমি শুনেছি পায়ূপথে সঙ্গম করা হারাম। কথাটা কি সত্যি?
– হ্যাঁ, এটি সত্যি। মহানবী (সঃ) পায়ূপথে সঙ্গম করা হারাম করেছেন।
৩. আমার স্বামী প্রায়ই আমার সাথে জোর করে সঙ্গম করে। কিন্তু তখন আমার সঙ্গম করার ইচ্ছা থাকে না। এক্ষেত্রে কী করণীয়?
– এক্ষেত্রে করণীয় যে, আপনি আপনার স্বামীকে বোঝান যে, আপনার ইচ্ছা না থাকলে তখন তার বিরত থাকাই উত্তম। কারণ, এতে দুজনই সঙ্গমের পূর্ণ আনন্দ লাভে ব্যর্থ হয়। তখন সেই সঙ্গমটা একপক্ষীয় হয়ে যায়।
৪. আমার স্বামী প্রায়ই আমাকে তার পুরুষাঙ্গ চুষতে বলে এবং আমার যোনী চুষতে চায়। কিন্তু আমার চুষতে ইচ্ছা করে না এবং আমারটাও চুষতে দেই না। খুব ঘৃণা লাগে। যদি গোপনাঙ্গ চোষা হয় তাহলে এতে কোন পাপ হবে কী?
– ইসলামে গোপনাঙ্গ চোষণ সম্পর্কে হাদিসে কোন সঠিক ব্যাখ্যা না থাকার ফলে এ আচরণকে হারামও বলা যাবে না, আবার হালাল ও বলা যাবে না। সুতরাং গোপনাঙ্গ চোষণের ব্যাপারটি সম্পূর্ণ আপনাদের ওপর।
৫. আমার হস্তমৈথুন করার অভ্যাস আছে। এটা কী পাপ?
– ইসলামে হস্তমৈথুন সম্পর্কে হাদিসে কোন সঠিক ব্যাখ্যা নেই যে এটি হারাম নাকি হালাল। তবে যদি আপনি এটাকে পাপ মনে করে থাকেন তাহলে ধীরে ধীরে হস্তমৈথুনের অভ্যাসটি ত্যাগ করতে পারেন।
৬. ইসলামে একজন পুরুষ দুজন নারীকে একসাথে নিয়ে সঙ্গম করতে পারবে কিনা?
– যেহেতু ইসলামে একই লিঙ্গের দুজন ব্যক্তি একে অপরের গোপনাঙ্গ দেখতে পারবে না, সেক্ষেত্রে এ ধরণের সঙ্গমকে না বলাই ভালো।
৭. আমি এবং আমার স্ত্রী কী একসাথে গোসল করতে পারবো? এটা কি জায়েজ?
– হ্যাঁ, অবশ্যই পারবেন এবং এটি জায়েজ।
৮. আমি শুনেছি যে ইসলামে একে অপরের গোপনাঙ্গ দেখা নিষেধ। কিন্তু আমার স্বামী আমার গোপনাঙ্গের দিকে তাকিয়ে সঙ্গম করে। এতে কী কোন সমস্যা হবে?
– স্বামী-স্ত্রী একে অপরের গোপনাঙ্গ দেখতে পারবে। এতে কোন বাঁধা নেই, অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রীর মাঝে কোন পর্দা নেই। তবে স্ত্রীর গোপনাঙ্গের দিকে তাকিয়ে সঙ্গম করলে পুরুষের চোখের জ্যোতি কমে যায়।
৯. নিজেদের দাম্পত্য জীবন নিয়ে অন্যদের সাথে খোলামেলা আচরণ করা কি ঠিক?
– না। এটি মোটেই ঠিক নয়। নিজেদের দাম্পত্য জীবনের কথা অন্যজনদের না বলাই ভালো। তবে চিকিৎসার প্রয়োজনে ডাক্তারের কাছে নিজেদের দাম্পত্য জীবনের কথা বলতে পারেন।
১০. সঙ্গম করার পূর্বে কী শৃঙ্গার (ফোরপ্লে) করা জরুরী?
– হ্যাঁ। কারণ পুরুষদের যৌনইচ্ছা হঠাৎ করে আসে আবার হঠাৎ করে চলে যায় কিন্তু নারীদের যৌনইচ্ছা আস্তে আস্তে করে আসে আবার আস্তে আস্তে করে যায়। তাই সঙ্গমের পূর্বে শৃঙ্গার করা জরুরী।
১১. সঙ্গম শেষে কী নারীদের গোসল করা জরুরী?
– হ্যাঁ। শুধু নারীদেরই নয়, পুরুষদেরও গোসল করে পবিত্র হয়ে নেয়া জরুরী।
১২. কনডম ব্যবহার করে কী জন্মনিয়ন্ত্রণ করা যাবে?
– যেহেতু মহানবীর যুগে কনডম আবিষ্কার হয়নি, তাই সেসময়ের আরবের লোকরা আল-আযল পদ্বতি ব্যবহার করতো, অর্থাৎ বীর্যপাত হওয়ার আগে যোনীপথ থেকে পুরুষাঙ্গ বের করে বীর্যপাত করতো। তবে যে আত্না আসার, সেটা আসবেই। তা যতই জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্বতি অবলম্বন করা হোক না কেন। তাই কনডম ব্যবহার করে জন্মনিয়ন্ত্রণ করা আর না করা সেটা সম্পূর্ণ আপনাদের ব্যাপার।
১৩. আমার মাসিকের সময় আমার স্বামী প্রায়ই পায়ূপথে সঙ্গম করতে চায়। কিন্তু আমি বাঁধা দেই। আমি জানি যে, মাসিকের সময় এবং পায়ূপথে সঙ্গম করা হারাম। তবে স্বামী-স্ত্রীর জন্য এ আইন শিথিল কিনা?
– না। সঙ্গমের ক্ষেত্রে এ দুটো বিষয় কখনোই শিথিল নয়। এ দুটি বিষয় সম্পর্কে ইসলামে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে।
১৪. স্বামী-স্ত্রী কি একে অপরের শরীরের বিভিন্ন অংশ স্পর্শ করতে পারবে?
– হ্যাঁ। এতে কোন সমস্যা নেই।
১৫. ইসলামে সঙ্গমের জন্য কি কোন নির্দিষ্ট আসন রয়েছে?
– না। আপনি যেভাবে ইচ্ছা বা যে আসনে সঙ্গম করলে আপনাদের সুবিধা হয় সেসব আসন অবলম্বন করতে পারেন।
১৬. যেহেতু মাসিকের সময় সঙ্গম নিষেধ, সেক্ষেত্রে কী শৃঙ্গার করা যাবে?
– চাইলে শৃঙ্গার করতে পারেন, তবে তা চুম্বন, স্তন চোষা এবং টিপ দেয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ব রাখবেন।
১৭. আমার স্বামী আমার স্তনের বোঁটা চুষে এবং স্তন টিপে। এটা কী জায়েজ?
– হ্যাঁ। এটি অবশ্যই জায়েজ। তাছাড়া স্তন টিপলে প্রাকৃতিকভাবেই আপনার স্তন বড় হবে।
১৮. আমি কী আমার স্ত্রীর স্তনের দুধ খেতে পারবো? এটি কী জায়েজ?
– না। এটি জায়েজ নয়। যদি আপনি ইচ্ছা করে খান, তাহলে আপনার স্ত্রী আপনার জন্য হারাম হয়ে যাবে। তাছাড়া স্তনের দুধ শুধুমাত্র সন্তানের জন্য, স্বামীর জন্য নয়।
১৯. সঙ্গমের সময় শরীরে কী একটু হলেও কাপড় রাখা উচিত?
– এটি রাখলে ভালো। তবে চাইলে পুরোপুরি উলঙ্গ হয়েও সঙ্গম করতে পারেন। সেটা আপনাদের ব্যাপার।
২০. স্বামী-স্ত্রী কী উলঙ্গ হয়ে বিছানায় শয়ন করতে পারবে?
– হ্যাঁ। এতে কোন সমস্যা নেই।
২১. বিছানা ছাড়া কী অন্য যে কোন স্থানে সঙ্গম করা যাবে?
– হ্যাঁ। তবে স্থানটি নির্জন হতে হবে এবং আপনাদের সঙ্গমের দৃশ্য যেন অন্যের দৃষ্টিগোচর না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং স্থানটি অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
২২. রোযা রাখা অবস্থায় কী সঙ্গম করা যাবে?
– না। এটি রোযা ভঙ্গের অন্যতম কারণ। যদি ভূলবশত রোযা রাখা অবস্থায় সঙ্গমে লিপ্ত হয়ে পড়েন, তাহলে তা মনে পড়া মাত্রই দুজনে পৃথক হয়ে যাবেন। এরজন্য কোন কাজ্বা কাফফারার প্রয়োজন নেই।
২৩. আমি জানি যে, সন্তান জন্মের পরবর্তী ৪০ দিন পর্যন্ত সঙ্গম জায়েজ নয়। এটা কী সত্যি?
– হ্যাঁ। কারণ সন্তান জন্মের পরবর্তী ৪০ দিন পর্যন্ত রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে। তাই এ সময়ে সঙ্গম জায়েজ নয়।
২৪. হজ্জ বা উমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে পবিত্র মক্কা নগরীতে অবস্থানকালে কী সঙ্গম করা যাবে?
– না। এটি জায়েজ নয়। কারণ ইহরাম অবস্থায় সঙ্গম করলে হজ্জ বা উমরাহ বাতিল হয়ে যাবে। তাছাড়া হজ্জ বা উমরাহ একটি ইবাদত এবং এটি ইসলামের পাচঁটি স্তম্ভের মধ্যে একটি।
২৫. ইসলাম কী সমকামী সমর্থন করে?
– না। কারণ, সমকামী পৃথিবীতে চলমান বংশবৃদ্বির ধারাকে রোধ করে।
২৬. ইসলামে কী গর্ভপাত করা হারাম?
– হ্যাঁ। তবে যদি এমন অবস্থার সৃষ্টি হয় যে, সন্তানকে বাচাঁতে গেলে মায়ের মৃত্যু হবে, তাহলে সেক্ষেত্রে গর্ভপাত করা জায়েজ।
২৭. স্বামী-স্ত্রী কী একে অপরের গোপনাঙ্গের লোম কাটতে পারবে?
– হ্যাঁ। এতে কোন সমস্যা নেই।
২৮. রোযা রাখা অবস্থায় আমি কী আমার স্ত্রীকে চুম্বন করতে বা জড়িয়ে ধরতে পারবো?
– যদি স্ত্রীকে চুম্বন করলে বা জড়িয়ে ধরলে যদি আপনার সঙ্গমের ইচ্ছা জেগে ওঠে বা যদি এ দুটি কাজ করার ফলে আপনার বীর্যপাত হয়, তবে তা আপনার জন্য প্রযোজ্য নয়। যদি আপনি এ দুটি কাজ করার পরও নিজেকে সংযত রাখতে পারেন তবে এটি আপনার জন্য প্রযোজ্য।
২৯. সঙ্গমকালে কী সেক্সটয় ব্যবহার করা যাবে?
– করা যায়, তবে না করাই ভালো। প্রয়োজনে সেক্সটয়ের বিকল্প হিসেবে হাত ব্যবহার করতে পারেন।
৩০. সঙ্গম করার জন্য কি নির্দিষ্ট কোন সময় রয়েছে?
– না। আপনি যখন ইচ্ছা তখনই সঙ্গম করতে পারেন। তবে মধ্যরাতকে সঙ্গমের জন্য আদর্শ সময় হিসেবে বেছে নেন অধিকাংশ দম্পতি।
৩১. হিল্লা বিবাহ কী ইসলাম সমর্থিত?
– না। হিল্লা বিবাহ হারাম। এটি মূলত কোনো বিয়েই নয় বরং হিল্লা স্বামীর সাথে বিয়ে ও সঙ্গম করাও হারাম।
৩২. একই দিনে কী একাধিক স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করা যাবে?
– না। কোন স্ত্রীর সাথে যেদিন সঙ্গমের দিন থাকবে সেদিন অন্য আর এক স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করা যাবে না।
৩৩. নারীদের কী খৎনা করা জরুরী?
– নারীদের খৎনা করা কোন আবশ্যকীয় বিষয় নয়। পুরুষদের খৎনা করা সুন্নত। কিন্তু মহিলাদের খৎনা করা সুন্নত বা জরুরী কিছু নয়। এছাড়া হাদীস ব্যাখ্যাকারীগণও নারীদের খৎনাকে সুন্নত বা জরুরী সাব্যস্ত করেননি। তবে নারীদের খৎনা করতে বাধ্য করা জায়েজ নয়।
৩৪. একই দিনে কী স্ত্রীর সাথে একাধিকবার সঙ্গম করা যাবে?
– করা যাবে। যদি একই সময়ের মধ্যে একাধিকবার সঙ্গম করা হয় তাহলে সঙ্গম শেষে একবার গোসলই যথেষ্ট। আর যদি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে করা হয় তবে আলাদাভাবে গোসল করতে হবে। তবে আদর্শ হলো সপ্তাহে ২/৩ বার সঙ্গম করা।
৩৫. মুতা বিবাহ কী শুধুমাত্র শিয়া ইসলামের প্রচলিত?
– হ্যাঁ। এটি একসময় সুন্নি ইসলামে প্রচলিত থাকলেও প্রথমে মহানবী (সঃ) এবং পরবর্তীতে হযরত ওমর (রা) এটি নিষিদ্ব করেন। তবে শিয়া ইসলামে আজো মুতা বিবাহ প্রচলিত রয়েছে।
৩৬. গর্ভাবস্থায় কী সঙ্গম করা যাবে?
– যদি গর্ভাবস্থায় ভ্রণের কোন প্রকার ক্ষতি হবার আশঙ্কা না থাকে তাহলে তা খুবই সতর্কতার সাথে করা যাবে।
৩৭. স্ত্রীদের সঙ্গমবিহীন থাকার সাধারণ ধৈর্য সীমা কত মাস?
– সাধারণত চার মাস। তবে পর্যাপ্ত কারণ ছাড়া এর বেশী সময় স্ত্রীদের সঙ্গম ছাড়া কাটানো ঠিক নয়।
৩৮. পুরুষাঙ্গ যোনীপথে প্রবেশ করানোর পর যদি বীর্যপাত না হয় তাহলে কী গোসল করতে হবে?
– হ্যাঁ। এটি ফরয। এছাড়া যদি পুরুষাঙ্গ যোনীপথে প্রবেশ না করেও অন্য উপায়ে (যেমনঃ হস্তমৈথুন) বীর্যপাত করা হয় তবুও গোসল করা ফরয।
৩৯. স্বামীর সাথে আমার সঙ্গম শেষ হওয়ার পরপরই আমার মাসিক শুরু হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় কী গোসল জরুরী?
– না। এমন অবস্থায় গোসল জরুরী নয়। একেবারে মাসিক বন্ধ হবার পরই গোসল করে পবিত্র হতে হবে।
৪০. নগ্ন অবস্থায় স্বামী-স্ত্রী আলিঙ্গন করলে যদি বীর্যপাত না হয়ে মযী বের হয় তাহলে কী গোসল করা ফরয?
– না। এক্ষেত্রে গোসল ফরয নয়। পুরুষাঙ্গ ধুয়ে ওযূ করলেই যথেষ্ট।