তথ্য প্রযুক্তি রিপোর্ট : আপনি যদি ইন্টারনেট ব্যবহারে সক্রিয় অথবা নিয়মিত সংবাদপত্র পাঠক হয়ে থাকেন। তাহলে মরণঘাতি ‘ব্লু হোয়েল’ গেম সম্পর্কে ইতোমধ্যেই জেনে গেছেন।
কারণ নামটি এখন আর নতুন নয়। এই খেলার জন্ম রাশিয়ায়। জন্মদাতা ২২ বছরের তরুণ ফিলিপ বুদেকিন। ২০১৩ সালে রাশিয়ায় প্রথম সূত্রপাত। ২০১৫ সালে প্রথম আত্মহত্যার খবর পাওয়া যায়। এরপর থেকে বিভিন্ন দেশে এ পর্যন্ত ২০০ প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এ মরণঘাতি গেম।
সবচেয়ে বেশি রাশিয়ায়। কিছুদিন আগ পর্যন্তও এটা ভারতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু সম্প্রতি এটা বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি এই ‘ব্লু হোয়েল সুইসাইড গেম’ এর ফাঁদে পড়ে ব্লু হোয়েলের ‘নির্দেশে’ আত্মহত্যা করেছে রাজধানীর সেন্ট্রাল রোডের এক কিশোরীও।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই ফাঁদ থেকে বাঁচার উপায় কি? চলুন জেনে নিই সে সম্পর্কে-
১। প্রথমত চাই আপনার সচেতনতা। কেন আপনি অপরের নির্দেশনায় যাকে আপনি কখনও দেখেন নি, যার পরিচয় জানেন না তার কথায় কেন নিজের জীবন অকালে বিলিয়ে দিবেন!
২। ব্লু হোয়েল গেম সম্পর্কিত কোনও লিংক আসলে তা এড়িয়ে চলা। সমাজের তরুণ ছেলে-মেয়ে থেকে শুরু করে সব বয়সীদের মাঝে এই গেমের ক্ষতিকারক দিকগুলো তুলে ধরা। তাদের সচেতন করা।
৩। আপনার সন্তানকে মোবাইলে ও কম্পিউটারে অধিক সময়ে একাকী বসে থাকলে দেখতে হবে সে কি করছে তার খোঁজ খবর নেয়া। সন্তানকে বাসা বা অন্যত্র কখনও একাকী বেশি সময় থাকতে না দেয়া এবং এই সব গেমের কুফল সম্পর্কে বলা।
৪। সন্তানদের মাঝে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার মানসিকতা সৃষ্টি করা। যাতে করে তারা বুঝতে পারে আত্মহত্যা করা বা নিজের শরীরকে ক্ষতবিক্ষত করা অনেক বড় ধরনের পাপের কাজ। আত্মহত্যা করা মহাপাপ।
৫। আপনার সন্তান ও পরিবারের কোনও সদস্য মানসিকভাবে বিপর্যস্ত কি না সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখা। কেউ যদি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয় তাকে সঙ্গ দেয়া। তার পাশে দাঁড়ানো। তাকে তিরস্কার না করে সমস্যা সম্পর্কে জানুন, সহযোগিতা করুন।
৬। কখনই কৌতুহলী মন নিয়ে এই গেমটি খেলার চেষ্টা না করা। কৌতুহল থেকে এটি নেশাতে পরিণত হয়। আর নেশাই হয়তো ডেকে আনতে পারে আপনার মৃত্যু।
৭। সবার জন্যই কোনো বিষয়ে সরাসরি না বলে দেয়াটা অস্বস্তির। কিন্তু কখনও কখনও সেই অস্বস্তিকর কাজটিই সুফল বয়ে আনে। এক্ষেত্রেও সরাসরি না বলে দেয়াটা জীবন বাঁচাতে সাহায্য করবে। অর্থাৎ কেউ ‘ব্লু হোয়েল’ খেলার প্রস্তাব দিলে সরাসরি না বলা উচিত।
৮। জীবনে যদি একঘেয়েমি এসে থাকে তবে কিছুদিন বেড়িয়ে আসা যেতে পারে। তবে একঘেয়েমি কাটিয়ে ওঠার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে, দৈনন্দিন কাজ থেকে দূরে থাকা এবং নতুন কিছু করা। তাই বলে ‘ব্লু হোয়েল’ গেম খেলা নয়!
৯। যে এই গেমটির প্রস্তাব দেবে উল্টো তাকে ‘ব্লু হোয়েল’ না খেলার পরামর্শ দিন।
১০। যদি অনলাইনে অচেনা কেউ আপনাকে এই গেমটি খেলতে প্ররোচিত করে, তবে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করুন।
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/১০–অক্টোবর–২০১৭ইং/নোমান