মোঃ আশরাফ আলী, স্টাফ রিপোর্টার ।। গত এপ্রিল ২০১৭ মাসের আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হাওড়াঞ্চলের মানুষ যখন দিশেহারা চোখে মুখে অন্ধকার দেখে এমনকি দুইবেলা দুইমুঠো ভাত খাওয়ার মত কোন ব্যবস্থা না থাকার দু:স্বপ্নে বিভোর তখন ব্র্যাক মানবিক সহায়তার জন্য এগিয়ে আসে।
প্রথম পর্যায়ে তারা ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, নিকলী এবং করিমগঞ্জ উপজেলায় মোট ১৪৭১১ টি পরিবারের প্রতি পরিবারকে ৩০ কেজি করে চাল এবং নগদ ৫০০ শত টাকা করে প্রদান করে। ত্রাণ সহায়তার দ্বিতীয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে তারা ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলায় ফেরিবোট সার্ভিস চালু করে। এসব ফেরিবোটের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্কুলে পৌঁছানো এবং ক্লাস শেষে পুনরায় শিক্ষার্থীদের বাড়িতে পৌঁছানো হচ্ছে। এসব ফেরিবোটের মাধ্যমে প্রতিদিন ব্র্যাক প্রায় ২৭০০ জন শিক্ষার্থীকে স্কুলে পৌঁছে দেয় এবং ক্লাস শেষে পুনরায় বাড়িতে পৌছায়।
জুলাই ২০১৭ থেকে শুরু হওয়া এইসব ফেরি বোটের সার্ভিস ক্ষেত্র বিশেষে ২০১৭ সালের বার্ষিক পরীক্ষা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে। বিশেষত পিএসসি, জেএসসি এবং এসএসসি শিক্ষার্থীদেরকে লক্ষ্য রেখে এই কার্যক্রম শুরু হলেও সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলোর সকল শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এসব নৌকার মাধ্যমে স্কুলে যাতায়াত করছে। স্কুলগুলো হচ্ছে- ইটনা উপজেলার মহেশ চন্দ্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বড়িবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ধনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, জয়সিদ্ধি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রায়টুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং লাইমপাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। মিঠামইন উপজেলার স্কুল গুলো হচ্ছে হাজী তায়েব উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কাটখাল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কা নপুর হাওর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ঢাকী ফুলবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ঘাগড়া আব্দুল গনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বরইহাটি এসইএসডিপি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং গোপদিঘী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওয়ান আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়। মোট ১৪ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৫ টি ফেরি বোটের মাধ্যমে এই সেবা প্রদান করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশে যেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে সেসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এই সুবিধা ভোগ করছে।
উল্লেখ্য যে হাওড় অঞ্চলে বর্ষা মৌসুমে হাওড়ে পানি বৃদ্ধির কারণে শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াতের জন্য ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা করে প্রতিমাসে প্রদান করে থাকে।