মুহাম্মদ কাইসার হামিদ, ভ্রাম্যমাণ প্রাতিনিধি ।। কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে প্রতিবেশী মামা কর্তৃক ৬ বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। গত ১৯ নভেম্বর রোববার দুপুরে উপজেলার সালোয়া ইউনিয়নের বাজরা মাছিমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শিশুটি পার্শবর্তী পশ্চিম তারাকান্দি উপ-আনুষ্ঠানিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (ব্র্যাক) শিশু ওয়ান শ্রেনীর ছাত্রী। এ ঘটনায় ধর্ষিতা শিশুর মা বাদী হয়ে গত ২৭ নভেম্বর সোমবার কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেন।
শিশুর পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ নভেম্বর একই গ্রামের মৃত হারিছ মিয়ার পুত্র ৩ সন্তানের জনক আব্দুল্লাহ (৩০) নামে এক লম্পট ঐ শিশুকে লোভ দেখিয়ে ফুসলিয়ে তাদের একটি পরিত্যাক্ত ঘরে নিয়ে শিশুটির মুখে হাতচাপা দিয়ে ধরে পরনের কাপড় খুলে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে। শিশুটি ব্যাথায় কাঁদতে কাদঁতে তার বাড়ি এসে পরিবারের নিকট ধর্ষণের আলামত দেখিয়ে সব ঘটনা খুলে বলে। শিশুর মা স্থানীয় ইউ.পি. সদস্য মোঃ আসাব উদ্দিন ও ইউ.পি. মাহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছাঃ রেখা বেগম সহ এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যক্তিদের নিকট এ ঘটনা খুলে বলে বিচার দাবী করেন।
ধর্ষিতা শিশুটি গত ২৭ নভেম্বর সোমবার বিকেলে তার বাড়িতে কান্নাকাটি করে এ প্রতিনিধিকে বলেন, আব্দুল্লাহ মামা আমাকে কুকুরের বাচ্চা দেওয়ার কথা বলে ভাঙ্গা একটি ঘরে নিয়ে আমার মুখে হাত দিয়ে ধরে আমার হাফপ্যান্ট খুলে জোর করে আমাকে খারাপ কাজ করে এবং আমাকে ভয় দেখিয়ে বলে এ ঘটনা কাউকে জানালে আবদুল্লাহ মামা আমাকে মেরে টুকরা টুকরা করে ট্রাংকের ভিতর ভরে রাখবে।
ধর্ষিতা শিশুর মা অভিযোগ করে বলেন, আব্দুল্লাহ’র পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের ভয়ে এলাকায় কেউ কথা বলার সাহস পায়না। তারা এলাকায় প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলে এ ঘটনায় আমরা যদি মামলা মোকাদ্দমা করি তাহলে তারা আমাদের ঘরে ইয়াবা ট্যাবলেট অথবা অস্ত্র রেখে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করবে। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছি। এ ঘটনার পর থেকে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল আব্দুল্লাহ’র পক্ষ হয়ে আপোষ মিমাংসার জন্য আমাদের চাপ সৃষ্টি করে আসছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউ.পি. সদস্য মোঃ আসাব উদ্দিন ও ইউ.পি. মাহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছাঃ রেখা বেগমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনার দিন শিশুর মা তাদের এ ঘটনা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ড. উর্মি বিনতে সালাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উভয় পক্ষকে ইউ এন ও অফিসে আসার জন্য নোটিশ দ্বারা জানানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হওয়ায় লম্পট আব্দুল্লাহ পলাতক রয়েছে।
এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত ঘটনাটি ধামাচাঁপা দেওয়ার জন্য এলাকায় মিমাংসার চেষ্টা চলছে।