অানিস মিয়া, ময়মনসিংহ ।। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: এ.বি. মো: শামছুজ্জামান বলেন স্বাস্থ্যসেবা অনিয়ম অবহেলা করলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-(টিআইবি)’র অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) মুক্তাগাছার সহযোগিতায়, মুক্তাগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে স্বাস্থ্যসেবায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি এবং সেবার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে ০৭ ডিসেম্বর ২০১৭ বৃহস্পতিবার সকাল ১১.০০ ঘটিকার সময় স্বাস্থ্যসেবাগ্রহীতা, সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের অংশগ্রহণে
এক জবাবাদিহিমূলক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। মুক্তাগাছা সনাকের সদস্য এ.কে.এম. মাহবুবুল আলম রতন এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় হাসপাতালের বর্তমান অবস’া উল্লেখ করে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সনাকের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপ-কমিটির আহ্বায়ক ও সনাক সদস্য অধ্যাপক মোঃ আইয়ুব খান। মুক্তাগাছার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: এ.বি. মো: শামছুজ্জামান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় মুক্তাগাছার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সম্পর্কে সেবাগ্রহীতাদের অভিজ্ঞতা ও নাগরিক প্রত্যাশা এবং হাসপাতালের সাথে সনাক এর অনুষ্ঠিত বিগত সভাসমূূহের অগ্রগতি উপস’াপন ও পর্যালেঅচনা করেন টিআইবি’র এরিয়া ম্যানেজার ইকবাল হোসেন। মতবিনিময় সভায় মুক্তাগাছার জনগণের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে স্বাস’্যসেবা উন্নয়ন কমিটি, স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এবং সেবাগ্রহীতাদের ভুমিকা বিষয়ক আলোচনা করেন সনাক সদস্য মলিনা রানী দত্ত।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর সার্বিক সেবার মানোন্নয়নে সুপারিশমূলক এবং প্রশ্নোত্তর পর্বে মুক্ত আলোচনায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সেবাগ্রহীতাগণ বিভিন্ন বিষয় কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চান। সম্প্রতি হাসপাতাল থেকে সেবাগ্রহীতা শামছুন্নাহার বলেন, হাসপাতালের সেবার মান আগের থেকে ভালো হয়েছে। তবে প্যাথলজিক্যাল টেস্ট এর ভালো ব্যবস’া নেই। রক্ত পরীক্ষা ও ছোট খাট পরীক্ষা ছাড়া বাকি সব পরীক্ষা ক্লিনিকে করতে হয়। আলট্রাসনোগ্রাম এর ব্যবস’া ও নেই। এ ব্যাপারে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। অন্য এক সেবা গ্রহীতা জরিনা বেগম বলেন, শিশুদের ঔষধ হাসপাতালে পাওয়া যায়না, সব ঔষধ বাইরে থেকে কিনতে হয়। সেবাগ্রহীতা রুহিতন বেগম বলেন, অনেক সময় হাসপাতালের কর্মচারীরা খারাপ আচরণ করেন। দত্তপাড়া গ্রামের আব্দুছ সাত্তার বলেন, স্ত্রীর ডেলিভারীর সময় লেবার ওয়ার্ডে টাকা না দেওয়ার কারণে খারাপ আচরণ করেন জনৈক নার্স। পয়ারকান্দি গ্রামের শাহিনা খাতুন বলেন, ডেলিভারীর জন্য হাসপাতালে এসেছিলাম কিন’ আমাকে না দেখেই ময়মনসিংহ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
সেবা গ্রহীতাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: এ.বি. মো: শামছুজ্জামান বলেন, আপনাদের মতামত ও অভিযোগগুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হবে এবং তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস’া ও উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। তিনি সেবা গ্রহীতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের কাছে যদি কখনো কোন নার্স বা অন্য কেউ অনৈতিকভাবে টাকা দাবী করেন তবে সাথে সাথে আমাকে জানাবেন আমি অবশ্যই তৎক্ষনাত আইনানুগ প্রশাসনিক ব্যবস’া গ্রহণ করবো। তিনি বলেন, মানুষের পাঁচটি মৌলিক অধিকারের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা হলো অন্যতম মৌলিক অধিকার। এই অধিকার খব্র করার সুযোগ কারো নেই। যদি কেউ স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে অনিয়মের পায়তারা করে তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস’া গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, মুক্তাগাছার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জনবলের যদিও ঘাটতি রয়েছে তবুও পূর্বের তুলনায় সম্প্রতি জনবল ঘাটতি বিশেষ করে ডাক্তার এবং নার্স সংকট অনেকাংশে নিরসন হয়েছে তবে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী সংকট এখনো রয়েছে। সীমিত সম্পদ কাজে লাগিয়ে মানুষের মৌলিক অধিকার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সাধারণ সেবাগ্রহীতাদেরকে সহযোগী মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে, তবেই সেবার মানের উন্নতি হবে এবং অধিক মানুষ সেবা পাবে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপসি’ত ছিলেন, হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা: মিঠুন কুমার বকসি, ডা: উৎপল সরকার, সনাক সদস্য সাংবাদিক হেলাল উদ্দিন নয়ন, হেনা সাহা, দেলোয়ারা আক্তার লাভলী এবং ইয়েস সদস্যসহ শতাদিক সেবা গ্রহীতা।