নিকলী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি ।। কিশোরগঞ্জের নিকলীতে গুরুই ইউনিয়ন কমপ্লেক্স প্রাঙ্গনে আজ ২০শে ডিসেম্বর পপি-রিকল-২০২১ প্রকল্পের উদ্যোগে পারিবারিক পর্যায়ে নারীদের সেবামূলক কাজে সহযোগিতাকরন শীর্ষক কর্মশালা পালিত হয়েছ। এতে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ ও সিবিও সদস্যগন অংশগ্রহন করেন। এই কর্মশালার মূলত: পারিবারিক পর্যায়ের সেবামূলক কাজে পুরুষ সদস্যদের এগিয়ে আসার আহবান।
অংশগ্রহনকারীদের সাথে আলোচনায় জানা যায়,নারী সদস্যগন পুরুষদের চাইতে সংসারের সেবামূলক কাজে অনেক পরিমাণ বেশী সময় ব্যয় করেন। সাংসারিক কাজ কর্মসহ সন্তানের লালন-পালন ,তাদের শিক্ষায় নিয়োজিত করা,অসুস্থ্য ব্যাক্তির সেবা করা ইত্যাদি কাজ মূলত নারীদেরকেই করতে হয়। পপি-রিকল প্রকল্প এর আগে কর্ম এলাকায় দাতা সংস্থা অক্সফ্যামের সহযোগিতায় নারী ও পুরুষ সস্যদের সমন্বয়ে র্যাপিড কেয়ার এ্যানালাইসিস (আর সি এ) টুলস্ এর কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। র্যাপিড কেয়ার এ্যানালাইসিস হচ্ছে বিনা পারিশ্রমিকে সেবামূলক কাজ যা থেকে কোন টাকা আয় হয় না। সমাজে বা পরিবারে এই কাজের মূল্যায়ন বা স্বীকৃতী খুবই কম। আমরা এর মাধ্যমে নারীর সেবামূলক কাজের চাপ কমিয়ে তাকে উৎপাদনমূলক কাজের সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য সহযোগিতা করে আসছি। বাড়তি কাজ যেন নারীর উপড় চাপিয়ে দেয়া না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখার জন্য কর্মশালায় পুরুষদের সচেতন করা হয়।
কর্মশালায় পুরুষ সদস্যগন স্বীকার করেন, পরিবারে সেবামূলক কাজে পুরুষ সদস্যদের পাশাপাশি অন্য সদস্যরাও সহযোগিতা করবে। ফলে নিজের কাজ নিজে করা ও পরিবারের কাজে সহযোগিতা করার মানসিকতা তৈরী হবে।
এই কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন গুরুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: আবু তাহের, ইউপি সদস্য লিজা আক্তার,হানিফ মিয়া ও আনোয়ার হোসেনসহ পরিষদের অন্যান্য সদস্যগন ও গুরুই ইউনিয়নের ৯টি সিবিও এর সদস্যবৃন্দ। কর্মশালায় আলোচনা করতে গিয়ে অগ্রদূত সমাজ কল্যান সমিতির সদস্য নুরেছা জানান”বাবার বাড়ি, স্বামীর বাড়ি সব বাড়িতে শুধু কাজই করলাম কিন্তু কোন মূল্যায়ন পাইলাম না”।
স্বপ্নের সিড়ি বহুমুখী উন্নয়ন সংগঠনের সদস্য তৌফিক মিয়া বলেন, ”আমি আমার মাকে সারাদিন কাজ করতে দেখি কিন্তু কোন দিন ভাবিনি এত কাজ করে। আজ থেকে আমিও আমার মায়ের কাজে সহযোগিতা করবো। নিজের মশাড়ী নিজেই টাঙ্গাবো”।
শাপলা সিবিওর ক্যাশিয়ার বিলকিস বলেন ”আমার স্বামী আমাকে সকল কাজে সহযোগিতা করে কিন্তু এই কাজ নিয়ে আমার স্বামীকে অনেকে অনেক কথা বলে কিন্তু আমার স্বামী কারো কথায় কান দেয় না। আমার স্বামী সহযোগিতা করে বলে আমি এলাকাতে স্বাস্থ্য ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করতে পারি। গ্রামে গিয়ে বাড়িতে বাড়িতে ঔষধ বিক্রি করি। বাড়তি টাকা আয় হয়।”
নিকলী পপি-রিকল-২০২১ প্রকল্প সমন্বয়কারী মো: মোশারফ হোসেন খাঁন এ প্রতিনিধিকে জানান, রিকল-২০২১ প্রকল্পের মধ্যদিয়ে আমরা প্রকল্প এলাকার ৪ টি ইউনিয়ন পরিষদের ৩১ টি সিবিওতে পারিবারিক পর্যায়ে নারীদের সেবামূলক কাজে সহযোগিতাকরন শীর্ষক কর্মশালার পর্যায়ক্রমে আয়োজনের মধ্যে দিয়ে পুরুষ সদস্যগনও যাতে সংসারের সেবামূলক কাজে নারীদের সাহায্য করতে মন- মানসিকতা রাখে যাতে করে নারীদের সেবামূলক অতিরিক্ত কাজের বোঝা কিছুটা লাঘভ হয়।