সাহিত্য ও সংস্কৃতি ।। ছোট্ট একটি কাঁঠাল গাছ। বাড়ির সামনের পুকুরপাড়ে। ছোট হলেও দেখতে খুব সুন্দর। কিছুটা ছাতার মতো প্রসারিত। প্রায় প্রতিদিনই তার পাশ দিয়ে আমার গমন হয়ে থাকলেও এক শুক্রবারে তার একটি শাখা আমাকে বিশেষভাবে আকর্ষিত করলো। দেখে মনে হলো অল্পদিনের মধ্যেই জেগেছে। পাতাগুলো দেখতে বেশ সুন্দর লাগছে। খুব ছোট ছোট। তার সাথে এখনো গাঢ় সবুজ হয়ে উঠেনি। অল্পক্ষণ অবলোকনের পরই তার সাথে ভাব জমাতে ইচ্ছে করল। করে নিলাম অতি সহজেই। পরদিন মাদরাসা বন্ধ। তাই বন্ধুর সাথে গল্প করতে একটু আগেই চলে আসলাম। সেদিনই তার সাথে আমার সবচেয়ে বেশি কথা হয়েছিল। কি কথা তা যদি মনের মাধুরী মিশিয়ে লিখতে পারতাম তাহলে অন্তত আমার কাছে হলেও সবচেয়ে মূল্যবান লেখা হয়ে উঠত। সেদিন তার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছিলাম। এভাবে চলতে থাকে আমাদের বন্ধুত্ব। দেখতে দেখতে পাতাগুলো অনেক বড় হয়ে উঠল। অন্য পাতাগুলোর মতোই। কিন্তু একদিন অন্য পাতাগুলোর সাথে তার একটি পার্থক্য অবলোকন করিছিলাম। কয়েকটা পাতা একটু হলুদ। কিন্তু সেটা আমাকে আগে ভাবিয়ে তুলেনি। অনেকদিন হয়ে গেল। পাতাগুলো আস্তে আস্তে হলুদ হতে শুরু করল। এক বিকেলে হালকা বাতাস বয়ছিল। চলতেছিলো আমাদের বন্ধুত্বের গল্প। হঠাৎ একটু জোড়ে বাতাস এলো। তার কথা বলা বন্ধ হয়ে গেল। দুনিয়া অন্ধকার হয়ে আসল তার কাছে। আমার কাছে বিদায় নিয়ে খসে পড়ল বোঁটা থেকে। কিন্তু কেন? গল্পটা শুরু হতে না হতেই শেষ হয়ে গেল। কেন? সেই প্রশ্ন বার বার আমাকে ভাবিয়ে তুলছে। অনেক গবেষণারর পর আবিষ্কার করতে পারলাম যে, এটা আল্লাহর ইচ্ছা। একদিন আমাকেও চলে যেতে হবে। নিজের দিকে তাকিয়ে দেখলাম আমার সময়ও শেষ হয়ে আসছে। কখন তার মতো বোঁটা থেকে খসে পড়ি তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই আজ থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছি সেই দিনের। কেননা মৃত্যুকে কেউ ঠেকাতে পারবেনা। আমিও একদিন তার তার মতো ঝরে পড়ব বোঁটা থেকে।