মোঃ মেহেদী হাসান ।। ২০১৮ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার আট সাধারণ বোর্ডের এসএসসি, মাদ্রাসা বোর্ডের দাখিল ও কারিগরি বোর্ডের এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষা শুরু হয় ১লা ফেব্রুয়ারি থেকে।
এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় তিন হাজার ৪১২টি কেন্দ্রে অংশগ্রহণ করেন ২০ লাখ ৩১ হাজার ৮৮৯ জন পরীক্ষার্থী। এরমধ্যে ১০ লাখ ২৩ হাজার ২১২ জন ছাত্র এবং ছাত্রীর সংখ্যা ১০ লাখ ৮ হাজার ৬৮৭ জন।
প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। রোধ করা যাচ্ছে না। সব কিছুকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এবারও এসএসসিতে প্রথম দিন থেকে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে। প্রথম পরীক্ষা ‘বাংলা প্রথম পত্র’ ফাঁস হওয়ার পর দ্বিতীয় দিনের পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। আর ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই অনুষ্ঠিত হয়েছে এই পরীক্ষা। এভাবে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় শিক্ষার্থী, অভিভাকরা ক্ষুদ্ধ, বিরক্ত এবং শঙ্কিত। পরীক্ষা শুরুর পৌণে ১ ঘণ্টা আগে প্রশ্ন ফাঁস হয়ে তা ফেসবুকে চলে আসে।
প্রশ্ন ফাঁসকারীদের ধরিয়ে দিলে শিক্ষামন্ত্রীর পুরস্কার ঘোষণার পরও বন্ধ হয়নি।
ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা পর্যন্ত পৌনে এক ঘণ্টা বা আধা ঘণ্টা আগে প্রশ্ন ফাঁস হলেও, এরপর অনুষ্ঠিত হওয়া ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা, গণিত, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, পদার্থ বিজ্ঞান, রাসায়নের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে যথাক্রমে এক ও দেড় ঘণ্টা আগে। এবার এএসসি পরীক্ষায় অনুষ্ঠিত সব কয়েকটি বিষয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার বহু আগে ফেসবুকে দেয়া প্রশ্নের সাথে পরীক্ষার হলে দেওয়া প্রশ্নপত্রের হুবহু মিল পাওয়া গেছে। বরাবরই প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটছে। এভাবে প্রশ্ন ফাঁস হতে থাকলে মেধাশূন্যহীন হয়ে পড়বে।
সরকার জঙ্গি দমন করতে পারছে, বিশ্ব ব্যাংককে উপেক্ষা করে পদ্মা সেতুর মতো কঠিন বৃহত প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে সক্ষমতা দেখানোর পরও প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে ব্যর্থ হচ্ছে কেন? প্রশ্ন হলো, সংশ্লিষ্টরা কি না দেখার ভান করছেন? সবাই জানে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে। পরীক্ষার্থী, অভিভাবকরাও বলছেন, যে প্রশ্ন তারা অনলাইনে পেয়েছে তার সাথে পরীক্ষা নেয়া প্রশ্নে পুরোপুরি মিলও আছে। সবাই দেখছেন, জানছেন কিন্তু কর্তৃপক্ষ কেন দেখছেন না? প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা স্পষ্ট হলেও সংশ্লিষ্টরা এর দায় কেন নিচ্ছেন না? এমনটা চলতে থাকলে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়বে, শিক্ষার মান বলে কিছু থাকবে না। প্রকৃত শিক্ষিত জাতি থেকে বঞ্চিত হবে দেশ। আর তা দেশের জন্য ভয়ানক একটা সংবাদ।
Tags: