muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

বিশেষ প্রতিবেদন

চিরিরবন্দরে লিচু গাছে মধু চাষ

এস.এম.নুর আলম চিরিরবন্দর(দিনাজপুর) প্রতিনিধি ।। মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে লিচুর বাগান। মুকুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে এগাছ থেকে ওগাছে উড়ে বেড়াচ্ছে মৌমাছি। ভ্রাম্যমাণ মৌচাষিরা লিচুগাছের তলায় বাক্স বসিয়ে মুকুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে শুরু করেছেন। এতে একদিকে যেমন মধু পাওয়া যাচ্ছে, তেমনি মুকুলে পরাগায়ন হওয়ায় লিচুর ফলনও বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।

চিরিরবন্দরের অমরপুর ও পুনট্টি ইউনিয়নের লিচুবাগানগুলোতে মৌমাছির বাক্স বসিয়ে মধু আহরণ করছেন মৌচাষিরা। পুনট্টি ইউনিয়নের চক মুসা গ্রামের বিলপাড়ার আলহাজ্ব মোজাহার আলীর ৩টি বাগানে টাঙ্গাইল থেকে আসা ৭ জন মৌচাষি ছোট-বড় বিভিন্ন আকৃতির মৌমাছির বাক্স বসিয়ে বৈজ্ঞানিক উপায়ে মৌচাষ করে মধু সংগ্রহ করছেন।

উপজেলার পুনট্টি ইউনিয়নের বিলপাড়ার আলহাজ্ব মোজাহার আলীর ৪বিঘা জমিতে লিচু বাগান রয়েছে। তাঁর বাগানে মৌচাষ করছেন টাঙ্গাইল জেলার ভুয়াপুরের পাঁচতেল্লা গ্রামের দুলাল তালুকদার।

তিনি জানান, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনে (বিসিক) মৌমাছি প্রকল্পের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়ে মৌচাষ শুরু করেন। প্রতি মৌসুমে বিভিন্ন জেলা থেকে মধু সংগ্রহ করছেন।

তিনি জানান, এ লিচু বাগানে মৌমাছির বাক্স রয়েছে ২৬০টি। এখানে ৬/৭দিনের মধ্যে বাক্সগুলো থেকে মধু সংগ্রহ করা হয়। প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১২ মণেরও বেশি মধু সংগ্রহ করা হবে। তবে ফুলের উপর নির্ভর করবে মধুর পরিমাণ। তিনি জানান, চলতি মৌসুমে এ বাগান থেকে ১০০ মণেরও বেশি মধু সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। প্রতিমণ মধু বিক্রি হয় ৭/৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ মধু দেশের এপি কোম্পানীর চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন দেশে রফতানী করা হচ্ছে। বাগান মালিক আলহাজ্ব মোজাহার আলী জানান, বাগানে মৌমাছি যতবেশি আসবে, তত পরাগায়ন ঘটবে। এতে লিচুর ফলনও বেশি হবে।

উপজেলার হরনন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রভাষক আফছার আলী খান বলেন, ‘প্রতি লিচু মৌসুমে আমি এখান থেকে পরিবারের জন্য মধু কিনে নিয়ে যাই। সবকিছুতেই যখন ভেজাল, তখন এখানে খাঁটি মধু পাচ্ছি। এটা আবার কম কিসের?’

চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ৫১০ হেক্টর জমিতে বোম্বাই, চায়না থ্রি, কাঠালী, মাদ্রাজীসহ নানাজাতের লিচুর চাষ হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মাহমুদুল হাসান জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রতিটি লিচু বাগানের গাছে গাছে প্রচুর মুকুল এসেছে। সুষ্ঠুভাবে পরাগায়ন ঘটলে ২০/৩০ ভাগ লিচুর ফলন বেশি পাওয়া যাবে। এতে কৃষক ও মৌ-চাষিরা লাভবান হন।

Tags: