কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় এক কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন ও ঈদের কেনাকাটার কথা বলে পালাক্রমে ধর্ষণের ঘটনায় প্রেমিকসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার (১২ই জুন) র্যাব-১৪, সিপিসি-২, কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের একটি বিশেষ দল উপজেলার শালংকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করে। র্যাব-১৪, সিপিসি-২, কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লে. শোভন খান, (এস), বিএন মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গণধর্ষণের শিকার কিশোরী বর্তমানে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। গণধর্ষণের বিষয়টি জানার পরই অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত প্রেমিক বাদশা মিয়া (২৫) সহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গ্রেপ্তার অন্য দুজন এরশাদ (২৫) ও রুস্তম (২১)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
এ ঘটনায় কিশোরীর পিতা বাদী হয়ে গ্রেপ্তার হওয়া তিন ধর্ষকসহ নাছিম (২২) ও মামুন (৩০) কে আসামি করে মঙ্গলবার দুপুরে পাকুন্দিয়া থানায় মামলা করেছেন।
গ্রেফতারকৃত প্রেমিক বাদশা পাকুন্দিয়া উপজেলার শালংকা গ্রামের মৃত আব্দুল মোতালিবের ছেলে, এরশাদ একই গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দিনের ছেলে, রুস্তম শালংকা গ্রামেরই মো. দুলাল মিয়ার ছেলে। নাছিম একই গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে এবং মামুন ছোট আজলদী গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে।
র্যাব ও পরিবার সূত্র জানায়, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মারিয়া এলাকার লিপা নামের কিশোরীর সাথে একমাস আগে মোবাইল ফোনে বাদশা মিয়ার পরিচয় হয়। পরে পরিচয় প্রেমে রুপ নেয়। প্রায়ই বাদশা বিয়ের প্রলোভন দেখাত। রোববার (১০ই জুন) বিকালে বাদশা মোবাইল ফোনে কিশোরীকে ঈদের কেনাকাটা করে দেয়ার কথা বলে। প্রেমিকের ফাঁদে পা দিয়ে কিশোরী বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাদশা মিয়ার সঙ্গে দেখা করে। পরে মোটর সাইকেলযোগে কিশোরীকে বাদশা পাকুন্দিয়া বাজারে নিয়ে যায়। সেখানে কিছু কেনাকাটার পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে কিশোরীকে পাকুন্দিয়া উপজেলার ছোট আজলদী গ্রামের ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন একটি কলাবাগানে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করা চার বন্ধু এরশাদ, রুস্তুম, নাছিম ও মামুনের সহায়তায় বাদশা ওড়না দিয়ে কিশোরীর মুখ বেঁধে পাঁচজনে মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে সোমবার ভোর রাত তিনটার দিকে কিশোরীকে কলা ক্ষেতে রেখে পালিয়ে যায় তারা। পরে পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে কিশোরীকে উদ্ধার করে সোমবার দুপুরে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
গণধর্ষণের বিষয়টি র্যাব জানতে পেরে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত পাঁচজনের মধ্যে মূল অভিযুক্ত বাদশা মিয়াসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য দুজনকে ধরতেও র্যাব কাজ করে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজহারুল ইসলাম সরকার মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠকে জানান, এ ঘটনায় কিশোরীর পিতা বাদী হয়ে নারী নির্যাতন আইনে (মামলা নং-১১(৬)১৮) রুজু করেছেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।