সজীব আহমেদ ।। দরিদ্র-অসহায়, তবে দৃঢ় প্রত্যয়ী এই মেয়েটির নাম তামান্না (১১)। জন্মস্থান নরসিংদী জেলার বেলাব থানার সররাবাদ গ্রামে। আর বর্তমান ঠিকানা ভৈরব শহরের কমলপুর এলাকায়।
একটু জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই বড় হয়ে একজন ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নবুকে নিয়ে তামান্না তার লক্ষে এগিয়ে চলেছে। তামান্ন ভৈরব রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলের তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রী।
বাবা-মা ও চার ভাই বোনের মধ্যে পরিবারের ২য় মেয়ে তামান্না। বড় বোন তানজিনা নবম শ্রেণীর ছাত্রী আর সেজু বোন টুম্পা দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। সবার ছোট এক বছর বয়সী রাকিবুল হাসান এখনো মায়ের কোলেই।
তামান্নার বাবা মোঃ আলী হোসেন মিয়া পেশায় জুতা ফেরিওয়ালা। মেলায় মেলায় ঘুরে ঘুরে জুতা বিক্রি করেন তিনি। স্বল্প আয়ে কোনো রকমে সংসার চলে আলী হোসেনের। তবে মেয়েদের পড়াশোনার ভারটা বয়তে রাজি নয় অসহায় দরিদ্র পিতা আলী হোসেন।
তাই মেয়েদের পড়াশোনা বাবদ কোনো টাকা পয়সা দেয় না বললেই চলে। এদিকে পড়াশোনা করে স্বপ্ন পূরণ করবে বলে আশায় বুক বেধে চলেছে তামান্না সহ তার আরো দুই বোন।
আর তাই রোজ পপকর্ন চিপস বিক্রি করে টাকা আয় করার সীদ্ধান্ত নেয় ১১বছরের এই শিশু মেয়েটি। হাসপাতালে, সিএনজি পাম্পে ঘুরে ঘুরে এই পপকর্ন চিপস বিক্রি করা তার কাজ। তামান্নার সাথে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া ছোট বোন টুম্পাও এই পপকর্ন চিপস বিক্রিতে নিয়োজিত।
সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এক বোন বের হলে পরে আবার আরেক জন বের হয় চিপস বিক্রি করতে। তাদের এই কাজে সহায়তা করেন নিরুপায় মা হাজেরা বেগম। রোজ পপর্কন চিপস ভেজে মেয়েদের হাতে তুলে দেন তিনি। বেলা শেষে এই চিপস বিক্রি করে উপার্জিত অর্থ মায়ের হাতে তুলে দেয় দুই বোন।
আর এই অর্থ দিয়েই তাদের পড়ালেখার খরচ চলে। জীবন যুদ্ধে তামান্নার মতো মেয়েদের জয় হবে উপর ওয়ালার কাছে এই প্রার্থনাই করি।
Tags: