muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ

ডেস্ক রিপোর্ট ।। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, মিয়ানমার সরকারের নির্যাতনে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া জটিল ও দীর্ঘমেয়াদী। এই আশ্রিতদের প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ মাত্র চার মাসের মধ্যে তিনটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করতে সক্ষম হয়েছে। চুক্তির শর্তানুযায়ী মাঠ পর্যায়ে প্রত্যাবাসন সংশ্লিষ্ট প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে টেবিলে উত্থাপিত সরকার দলীয় এমপি নেত্রকোণা-৫ আসন থেকে নির্বাচিত ওয়ারেসাত হোসেন বেলালের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। এর আগে বিকালে ড. শিরিন শারমীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশন শুরু হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মুসলিম জনগোষ্ঠী তথা রোহিঙ্গাদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে বিরাজমান রাজনৈতিক ও অথনৈতিক বৈষম্য এবং মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও স্থানীয় রাখাইন কমিউনিটির অত্যাচার নির্যাতনের পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গারা পালিয়ে এসে শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণ করেছে। গত বছরের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী পরিচালিত অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত প্রায় ৭ লাখ মিয়ানমারের নাগরিক বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণ করে। এত অল্প সময়ে বিপুল সংখ্যাক রোহিঙ্গার আগমন বাংলাদেশে আর্থ-সামাজিক ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করেছে। এর আগে ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর নিজ দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে আরো ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা এখানে আশ্রয় নেয়। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ।

তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সরকারের নির্মম নির্যাতনের বিষয়ে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও রোহিঙ্গাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় মিয়ানমারের উপর চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে। এমনকি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সমস্যা ও তার আশু প্রতিকারের ব্যাপারে বেশকিছু প্রস্তাব তুলে ধরেছেন। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে অনতিবিলম্বে এবং চিরতরে মিয়ানমারের সহিংসতা ও জাতিগত নিধন নিঃশর্তে বন্ধ করা এবং কফি আনান কমিশনের সুপারিশালার নিঃশর্ত ও পূর্ণ ও দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া জটিল ও দীর্ঘমেয়াদী। তা সত্বেও এ কার্যক্রমকে তরান্বিত করতে মাঠ পর্যায়ে একাধিক ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাখাইন রাজ্যে যথাযথ সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ এবং আন্তজার্তিক মহল মিয়ানমারের উপর চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে। আশা করা যায়, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ শিগগিরই রাখাইন রাজ্যে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করবে এবং রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করা সম্ভব হবে।

সংরক্ষিত মহিলা আসন-২ থেকে নির্বাচিত সফুরা বেগমের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, বর্তমানে পৃথিবীর ৫৮টি দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১৮টি নতুন মিশন চালু করা হয়েছে। আন্তঃরাষ্ট্র সম্পর্ক উন্নয়নে আরো ৭টি নতুন মিশন স্থাপনের বিষয়টি বিভিন্ন পর্যায়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তার মধ্যে রুমানিয়ার বুখারেস্ট, ভারতের চেন্নাই ও অষ্ট্রেলিয়ার সিডনিতে নতুন মিশনের কার্যক্রম শিগগিরই চালু করার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এছাড়াও আফগানিস্তানের কাবুলে, সুদানের খার্তুমে, সিয়েরা লিওনের ফ্রিটাউনে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অদূর অভিষ্যতে নতুন মিশন খোলার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের মেয়াদে কোন দূতাবাস বন্ধ হয়নি।

Tags: