muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

শূন্যরেখায় আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে সরিয়ে নেওয়ার আশ্বাস

ডেস্ক রিপোর্ট ।। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি তমব্রু এলাকার কোনারপাড়া সীমান্তের শূন্যরেখায় আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষা বাহিনী বিজিবি ও মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষা বাহিনী বিজিপির মধ্যে পতাকা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান বিজিবির কক্সবাজার রিজিওয়নের কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এস এম রকিবুল্লাহ।

তবে প্রেস ব্রিফিংকালে বিজিবির পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হলেও বিজিপির প্রতিনিধি দলের প্রধান কোনো কথা বলেননি। বিজিবির কক্সবাজার রিজিওয়ন সদর দপ্তরে দুপুর ১২টায় শুরু হওয়া বৈঠক শেষ হয় বিকেল ৪টায়।

এস এম রকিবুল্লাহ বলেন, গত বছর আগস্ট মাসে মিয়ানমারে সহিংসতার পর থেকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তমব্রু এলাকার কোনারপাড়া সীমান্তের শূন্যরেখায় আশ্রয় নিয়েছিল বেশ কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গা নাগরিক। এখনো সেখানে চার হাজারের বেশি  রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপের পর এ সব রোহিঙ্গাদের দ্রুত সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে মিয়ানমারের বিজিপি।

তিনি বলেন, সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সীমান্তে উদ্ভুত নানা সমস্যা ও সমাধানে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।

“বৈঠকে উভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নিয়মিত যৌথ টহল, ইয়াবাসহ মাদক পাচার রোধ, সীমান্ত পরিস্থিতি এবং তথ্য আদান-প্রদানসহ সীমান্তে দু’দেশের মধ্যে আন্তরিকতাপূর্ণ আচরণের ব্যাপকতা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।”

বাংলাদেশের পক্ষে ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদকের বিষয়ে অবহিত করা হলে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে মাদকরোধে সহায়তার আশ্বাস দেন বলে জানান বিজিবির এ কর্মকর্তা।

এস এম রকিবুল্লাহ বলেন, “এ ছাড়া বৈঠকে মিয়ানমারের কতিপয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্যদের এদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় আনাগোনা থাকার অভিযোগ তোলা হলে বিজিবি তা অস্বীকার করে জানায়, যে কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জিরো-ট্রলারেন্স নীতিতে অবস্থান নিয়েছে। এদেশের মাটি ব্যবহার করে কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রতিবেশী দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া হবে না। এটা নিয়ে স্বয়ং সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে।”

দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কোন্নয়ন এবং রিজিওয়ন ও ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে নিয়মিত সৌজন্য পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠানে উভয়পক্ষ সম্মত হয়েছে জানিয়ে বিজিবির রিজিওয়ন কমান্ডার বলেন, আগামী ডিসেম্বরে মিয়ানমারের মংডুতে বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে রিজিওয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠানে মিয়ানমার আশ্বাস দিয়েছে।

বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিজিবি কক্সবাজার রিজিওয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম রাকিবুল্লাহ। মিয়ানমারের পক্ষে ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিজিপির মংডু রিজিওয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাউন টিও।

শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা শিশুকে বিজিপির গুলিবর্ষণ
নাইক্ষ্যংছড়ির শূন্যরেখায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শিশু মিয়ানমারের বিজিপির গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তমব্রু এলাকার কোনারপাড়া সংলগ্ন সীমান্তের শূন্যরেখায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান ঘুমধুম পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক ইমন চৌধুরী।

গুলিবিদ্ধ আনসার উল্লাহ (১২) রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা জামাল হোসেনের ছেলে। ক্যাম্পের রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা (মাঝি) আরিফ উল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গুলিবিদ্ধ রোহিঙ্গা শিশুকে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প সংলগ্ন রেড ক্রিসেন্ট ফিল্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান পরিদর্শক ইমন চৌধুরী।

তিনি বলেন, বিকেলে কোনারপাড়া শূন্যরেখায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প লাগোয়া সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া ঘেঁষে কিছু শিশু খেলা করছিল। এ সময় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষা বাহিনী বিজিপির আকস্মিক গুলিবর্ষণে এক রোহিঙ্গা শিশু গুলিবিদ্ধ হয়।

“পরে স্থানীয় ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা উদ্ধার করে নিয়ে আসলে গুলিবিদ্ধ আনসার উল্লাহকে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প সংলগ্ন রেড ক্রিসেন্ট ফিল্ড হাসপাতালে ভর্তি করে। শিশুটি বাম পায়ের উরুতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে। সে এখনো সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে।”

অন্য কারণে মিয়ানমারের বিজিপি গুলিবর্ষণ করেছে কি না, তা নিশ্চিত নন বলে জানান পুলিশ পরিদর্শক ইমন চৌধুরী। তবে এ নিয়ে বিজিবির সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে কারো বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

Tags: